
বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি নেতাদের স্পষ্ট বার্তা—মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো ছাড় নয়, জামায়াত-শিবিরের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই চলবেই
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
“আমার নাম শুনলে রাজাকাররা ভয়ে পালিয়ে যেত। আর আজ সেই রাজাকারের বাচ্চারা যদি বলে মুক্তিযুদ্ধ হয় নাই, আমি কি ছাইড়া দিমু?” — এমনই ক্ষোভ ঝেড়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, “তাদের ছেড়ে দিলে সেটা হবে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি।”
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে কিশোরগঞ্জের ইটনা কলেজ মাঠে কৃষক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াত-শিবিরের অস্বীকৃতির কড়া সমালোচনা করেন ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস নেই। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে। কিন্তু আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। আমি একাত্তরের যুদ্ধে কমান্ডার ছিলাম। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও একজন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।”
ফজলুর রহমান আরও বলেন, “যারা এখন বলে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, তারা আসলে আমাদের রক্ত, আমাদের স্বপ্নের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তাই আমি বাধ্য—আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেই থাকব।”
জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “তারা দাবি করে এ দেশে নাকি কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। বলে, ইন্ডিয়া গন্ডগোল লাগিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন। একদিনে ৫০০ লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তারপরেও তারা এই কথা বলার সাহস করে!”
তারেক রহমানকে নিয়ে অশালীন বক্তব্য দেওয়ার জন্য জামায়াত-শিবিরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগও এত বাজে কথা বা বিশ্রী স্লোগান দেয়ার সাহস পায়নি, যা দিয়েছে জামায়াত-শিবির ও রাজাকাররা। এ কারণে এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। রাজাকার-আলবদর থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা তাদের এসব কথার কঠিন জবাব দেব।”
তিনি বলেন, “ওরা নির্বাচন চায় না। সচিবালয়, ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, থানা—সব জায়গায় নিজেদের লোক বসিয়েছে। তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যাতে দেশকে বিপদে ফেলা যায়। কিন্তু আমরা তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।”
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মো. হাবিবুল হান্নান।
বক্তব্য রাখেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন খান মিল্কী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম, সদস্য সচিব ওবায়দুল্লাহ ওবায়েদ, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েল এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমেশ ঘোষ প্রমুখ।