
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুগণ,
অনেকদিন ধরে আমার ইচ্ছে ছিল কুরআনে আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ গুলো একত্রিত করার। আমরা মুসলমান হিসেবে বিশ্বাস করি, কিন্তু অনেকেই এখনো সম্পূর্ণভাবে জানি না যে আল্লাহ আমাদের জন্য কী আদেশ দিয়েছেন এবং কী নিষিদ্ধ করেছেন।
এই প্রচেষ্টার প্রথম পর্বে আমি নিষেধ বা হারাম বিষয় গুলো একত্রিত করেছি। প্রতিটি নিষিদ্ধ বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কুরআনের আয়াত সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছি, যাতে কোনো ব্যক্তিগত মতামত ছাড়াই সরাসরি আল্লাহর বাণী উপস্থাপন করা যায়।
পরবর্তী পর্যায়ে, ইনশাআল্লাহ, আল্লাহর আদেশসংক্রান্ত আয়াতগুলো সংকলন করব।
আশা করি, এই প্রয়াস আমাদের সবার জন্য উপকারী হবে এবং আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলতে সাহায্য করবে।
১- শিরক করা- (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
অংশীদার করা, মূর্তি পূজা, আল্লাহ ছাড়া অন্যকে উপাস্য মনে করা,আল্লাহর বিধানের সাথে অন্য বিধান সঠিক করা,
আল্লাহ বলেন….
”তখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বললেন, ‘হে প্রিয় সন্তান! আল্লাহর সাথে কখনো শিরক (অংশীদার সৃষ্টি) করো না। নিশ্চয়ই শিরক একটি মহান জুলুম (অত্যাচার)।'” ৩১:১৩
২-কুফরী, অঙ্গীকার ভঙ্গ করা -(শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন….
”আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী; সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।” ২:৩৯
”তাহলে, যদি তারা তাদের শপথ ভঙ্গ করে এবং তাদের অঙ্গীকারের পর তোমাদের ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো যারা কুফরি করেছে। তাদের শাস্তি কেবল জাহান্নাম। এবং তা হল সবচেয়ে নিকৃষ্ট পরিণতি। “৯:১২
৩- আল্লাহর ও রাসূলের বিরোধিতা করা।(শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন….
”যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অবাধ্য হবে এবং তাদের সীমা অতিক্রম করবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, সেখানে সে চিরকাল থাকবে এবং তার জন্য থাকবে অপমানজনক শাস্তি।”৪:১৪
৪-মুনাফেকি,(শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন……
”নিশ্চয়ই মুনাফিক পুরুষরা এবং মুনাফিক মহিলারা জাহান্নামের আগুনে থাকবে, চিরকাল সেখানে। তা তাদের জন্য যথেষ্ট, আল্লাহ তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে চিরন্তন শাস্তি।” ৯:৬৮
৫-অবৈধ সেক্স, ব্যভিচার (ইয়াজনুল)(শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন….
তারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডাকে না। আর যথার্থতা ব্যতীত কোন প্রাণ হত্যা করে না যা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন আর তারা ব্যভিচার করে না। আর যে এগুলো করে সে শাস্তির সাক্ষাৎ লাভ করবে।
ক্বিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে আর সে সেখানে লাঞ্ছিত হয়ে চিরবাস করবে। ২৫:৬৮-৬৯
৬- সমকামিতা হল সিমালঙ্ঘন অপরাধ।(শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলে,,,,
এবং লূত (আঃ) তার সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমরা কি অশ্লীলতা (ফাহিশা) করতে, যদিও তোমরা তা দেখতে পাচ্ছো? তোমরা কি পুরুষদের কামনা করছো নারীদের বাদ দিয়ে? বরং তোমরা অতিরিক্ত সীমালঙ্ঘনকারী জাতি!’” ২৯:২৮-২৯
৭-রিবা অতিরিক্ত গ্রহণ করা, (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন…..
”হে যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছো! তোমরা সুদ খাবে না, বহু গুণে, এবং আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলতা লাভ করো এবং তুমি আগুন থেকে সাবধান থাকো, যা কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ৩:১৩০-১৩১
এবং তারা সুদ গ্রহণ করেছিল, যদিও তাদের তা নিষেধ করা হয়েছিল, এবং তারা মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ে ফেলেছিল, এবং তাদের জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে; এবং পরকালে তাদের জন্য ভয়ংকর শাস্তি রয়েছে।” ৪:১৬১
৮-এতিমের হক ও উত্তরাধিকারীদের হক।(শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন…..
নিশ্চয়ই যারা অন্যায়ভাবে (অত্যাচার করে) এতিমদের সম্পদ ভোগ করে, তারা মূলত নিজেদের পেটে আগুন ঢোকাচ্ছে, এবং তারা অবশ্যই জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করবে।”৪:১০
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব। ৪:১১-১৪
৯-অপবাদ দেওয়া, অপমানকারী, তিরস্কারকারী, কটাক্ষ করা, নিন্দা করা, পেছনে গালি দেওয়া।সমালোচনা করে,খোঁচা দিয়া কথা বলা। (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন….
তীব্র ধিক্কার রয়েছে প্রতিটি কটূক্তিকারী ও অপবাদকারী জন্য-না! নিশ্চয় তারা নিক্ষিপ্ত হবে “হুতামাহ”-এ ১০৪ :১-৯
আর যারা সচ্চরিত্র নারীদের ওপর ব্যভিচারের অপবাদ দেয়, অতঃপর তারা চারজন সাক্ষী উপস্থিত করতে পারে না, তাদের আশি বেত্রাঘাত করো এবং কখনোই তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ কোরো না। তারা সত্যিই পাপী (ফাসিক)।”২৪:৪
১০- দাঙ্গা ফ্যাসাদ করা, নৈরাজ্য সৃষ্টি করা (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে ফাসাদ (বিপর্যয়,বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি,অরাজকতা) সৃষ্টি করতে তৎপর হয়, তাদের প্রতিফল এই যে, তাদের হত্যা করা হবে অথবা শূলিতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা হবে অথবা তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটি তাদের জন্য দুনিয়াতে লাঞ্ছনা, এবং আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।” ৫:৩৩
১১-কুরআনের বাইরে বিচার/ফয়সালা করা নিষেধ
আল্লাহ বলেন….
আর যারা আল্লাহর দ্বারা অবতীর্ণ আইন অনুযায়ী বিচার করবে না, তারা কাফির।” ৫:৪৪
আর যারা কুফরী করবে ও আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করবে, তারাই জাহান্নামী; সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।২:৩৯
১২-ওজনে কম দেওয়া, (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন…
ধ্বংস সেই সমস্ত ওজনে কম দেওয়া লোকদের জন্য,
৮৩:১(সম্পূর্ণ সুরাটি পড়লে বুঝতে পারবেন)
১৩-যাদু টোনা (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন……
এবং সুলায়মানের রাজত্বকালে শয়ত্বানরা যা পাঠ করত, তারা তা অনুসরণ করত, মূলতঃ সুলায়মান কুফরী করেনি বরং শয়ত্বানরাই কুফুরী করেছিল, তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত এবং যা বাবিলের দু’জন ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর পৌঁছানো হয়েছিল এবং ফেরেশতাদ্বয় কাউকেও (তা) শিখাতো না যে পর্যন্ত না বলত, আমরা পরীক্ষা স্বরূপ, কাজেই তুমি কুফরী কর না,এতদসত্ত্বেও তারা উভয়ের নিকট হতে এমন জিনিস শিক্ষা করতো, যদ্বারা তারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করতো, মূলতঃ তারা তাদের এ কাজ দ্বারা আল্লাহর বিনা হুকুমে কারও ক্ষতি করতে পারত না, বস্তুতঃ এরা এমন বিদ্যা শিখত, যদ্দ্বারা তাদের ক্ষতি সাধিত হত আর এদের কোন উপকার হত না এবং অবশ্যই তারা জানত যে, যে ব্যক্তি ঐ কাজ অবলম্বন করবে পরকালে তার কোনই অংশ থাকবে না, আর যার পরিবর্তে তারা স্বীয় আত্মাগুলোকে বিক্রয় করেছে, তা কতই না জঘন্য, যদি তারা জানত!২:১০২
১৪-অত্যাচারী-জুলুমকারী-সাহায্যকরী,
অন্যের সম্পদ , ঘুষ,ষড়যন্ত্র, অন্যায়ভাবে শাসন/ক্ষমতা ব্যবহার করা, অন্যায়ের পক্ষে, ন্যায্য অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া, অত্যাচার করা, (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন….
শুধুমাত্র তারা ব্যতিক্রম, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে, অধিক পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ করেছে এবং জুলুমের শিকার হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে। আর যারা অন্যায় করেছে, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে কোন ঠিকানায় তারা ফিরে যাবে!”২৬:২২৭
তোমরা জালিমদের (অত্যাচারীদের) দিকে ঝুঁকো না (সহযোগিতা করো না), তাহলে আগুন (জাহান্নাম) তোমাদের স্পর্শ করবে, এবং তোমাদের জন্য আল্লাহ ছাড়া কোনো অভিভাবক (সহায়তাকারী) থাকবে না, তারপর তোমাদের সাহায্যও করা হবে না।”১১:১১৩
হে ঈমানদারগণ! তোমরা অন্যায়ভাবে একে অন্যের সম্পদ গ্রাস করো না, তবে পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসায় বৈধ এবং নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনো না কিংবা তোমরা পরস্পরকে হত্যা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি কৃপাময়।
আর যে ঐ কাজ করবে সীমালঙ্ঘন ও অন্যায়ভাবে, আমি অচিরেই তাকে আগুনে প্রবেশ করাব। আর সেটি হবে আল্লাহর উপর সহজ। ৪:২৯-৩০
১৫-ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা
জেনে বুঝে মুমিন হত্যা করা, কাফের মুশরিকরা চুক্তি ভঙ্গ না করলে হত্যা করা, (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন…..
”যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুমিনকে হত্যা করে, তার প্রতিফল জাহান্নাম, যেখানে সে স্থায়ীভাবে থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিশাপ দিয়েছেন এবং তার জন্য ভয়ংকর শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।”৪:৯৩
১৬- সীমালঙ্ঘন, অহংকার করা, আল্লার আয়াতকেও স্বীকার করে। (শাস্তি সরাসরি জাহান্নাম)
আল্লাহ বলেন…..
তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামে বিছানা এবং তার উপরে আচ্ছাদন, এবং এভাবেই আমরা সীমালংঘনকারীদের প্রতিদান প্রদান করি।” ৭:৪১
”তোমাদের প্রভু বলেছেন: ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করব। নিঃসন্দেহে যারা আমার উপাসনায় অহংকার করবে, তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং অপমানিত হবে।'” ৪০:৬০
”অতএব, তোমরা জাহান্নামের দরজায় প্রবেশ করো, সেখানে তোমরা চিরস্থায়ী হবে।”সূরা আন-নাহল (১৬:২৯)
১৭-নিন্দা,মন্দ নামে ডাকা,উপহাস করা,তাচ্ছিল্য করা,ছোট করে কথা বলা,
আল্লাহ বলেন……..
”হে বিশ্বাসীগণ! পুরুষরা যেন অন্য পুরুষদের উপহাস না করে, কারণ তারা তাদের থেকে ভালো হতে পারে। এবং নারীরা যেন অন্য নারীদের উপহাস না করে, কারণ তারা তাদের থেকে ভালো হতে পারে। এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডাকো না। ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকাটা কতই না নিকৃষ্ট। এবং যারা তাওবা করেনি, তারা জালেম।”সূরা আল-হুজরাত (49:11)
১৮-গীবত করা,অনুমান/ আন্দাজ/সন্দেহ/ধারণা করে কথা বলা,(গোপন তথ্য অনুসন্ধান করা।)
আল্লাহু বলেন…
হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিক সন্দেহ করা থেকে বেঁচে থাকো, কারণ কিছু সন্দেহ গুনাহ। এবং তোমরা গোপন অনুসন্ধান কোরো না এবং একে অপরের গীবত কোরো না। তোমাদের কেউ কি পছন্দ করবে যে সে তার মৃত ভাইয়ের মাংস খাবে? তোমরা তো অবশ্যই এটি অপছন্দ করবে। অতএব, আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।(49:12)
১৯-চুরি করা
আল্লাহ বলেন…..
আর চোর ও চোরনী তাদের হাত কেটে দাও, তাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ, আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। আল্লাহ হলেন মহাপরাক্রান্ত, মহাবিজ্ঞানী। ৫:৩৮
২০- মিথ্যা বলা,মিথ্যা সাক্ষী।
হে ইমানদাররা, তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে নিজেদের সত্যের সাক্ষী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করো- যদিও তা তোমাদের নিজেদের, তোমাদের মা-বাবার কিংবা তোমাদের নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে যায়- চাই সে ধনী হোক কিংবা গরিব হোক (তা দেখার বিষয় নয়)। কারণ আল্লাহর সন্তুষ্টি তাদের চেয়ে বড় বিষয়। সুতরাং তোমরা ন্যায়বিচারের সময় নিজেদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না। যদি তোমরা পেঁচানো কথা বল কিংবা (সত্য সাক্ষ্য দেওয়া থেকে) বিরত থাকো- তাহলে জেনে রেখো, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহর তার খবর রাখেন। ২: ১৩৫
২১-শপথ ভঙ্গ করা,
”আল্লাহ আপনাদের শপথ ভঙ্গের জন্য শাস্তি দেবেন না যদি তা অযথা (অপ্রয়োজনীয়) হয়ে থাকে, কিন্তু তিনি আপনাদের শাস্তি দেবেন যদি আপনি সত্যিই শপথ ভঙ্গ করেন। অতএব, তার শাস্তি হল: আপনি দশটি অভাবীকে মধ্যম মানের খাদ্য প্রদান করবেন যা আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের খাওয়ান, অথবা তাদের পোশাক পরিধান করাবেন, অথবা একটি দাসকে মুক্ত করবেন। তবে, যাদের কিছুই নেই, তারা তিনটি দিন রোজা রাখবে। এটি আপনাদের শপথের পরিশোধ যখন আপনি শপথ করেন। আর আপনাদের শপথগুলো রক্ষা করুন। এইভাবে আল্লাহ আপনাদের আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন যাতে আপনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।”৫:৮৯
২২-মাদক, জুয়া, ভাগ্য যাচাই
আল্লাহ বলেন……
হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর মূর্তী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমন্ডিত হতে পার। ৫:৯০-৯২
২৩-প্রাণী হারাম।। সরাসরি জাহান্নামের কথা উল্লেখ নেই তবে কেউ যদি সীমালংঘ করে বা অহংকার করে অস্বীকার করে খায় তবে সে জাহান্নামী।
আল্লাহ বলে……
”বলুন, আমি যে ওহি পেয়েছি, তাতে কোনো খাবার হারাম পাই না, তবে তা মৃত জীব, প্রবাহিত রক্ত, শূকরের মাংস—নিশ্চয়ই তা অপবিত্র—এবং যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। তবে কেউ যদি নিরুপায় হয়ে পড়ে এবং বিদ্রোহ ও সীমালংঘন না করে, তাহলে আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।”সূরা আল-আনআম (৬:১৪৫)
২৪-দরিদ্রের ভয় সন্তান হত্যা করা,
আল্লাহ বলেন….
আর দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। আমিই তাদের এবং তোমাদের রিজিক দান করি। নিশ্চয়ই তাদের হত্যা করা একটি গুরুতর অপরাধ।”১৭:৩১
২৫-কুরআনে নিষেধকৃত ব্যক্তিদের বিয়ে করা।
আল্লাহ বলেন….
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে: তোমাদের মায়েরা, কন্যাসন্তান, বোনেরা, পিতৃ-পক্ষের ফুফুরা, মাতৃ-পক্ষের খালারা, ভাইয়ের কন্যারা, বোনের কন্যারা, তোমাদের সেসব মায়েরা যারা তোমাদেরকে দুধ পান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-ভাইবোন, তোমাদের স্ত্রীদের মায়েরা, তোমাদের পালিত কন্যারা যারা তোমাদের সেসব স্ত্রীদের গর্ভে জন্মেছে যাদের সঙ্গে তোমরা দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করেছ (কিন্তু যদি তোমরা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন না করো, তবে এতে তোমাদের কোনো দোষ নেই), এবং তোমাদের নিজেদের শরীরজাত পুত্রদের স্ত্রীগণ; আর দুই বোনকে একসঙ্গে বিবাহ করাও হারাম, তবে যা অতীতে হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”
এবং সেসব বিবাহিত নারীও (তোমাদের জন্য হারাম), তবে তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে (দাসীগণ) তারা ব্যতিক্রম। এটি আল্লাহর বিধান তোমাদের জন্য। ৪:২৩-২৪
২৬অহংকার করা, নিজেকে বড় মনে করে চলাফেরা করে
আল্লাহ বলেন…
মানুষের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে কথা বলো না এবং পৃথিবীতে গর্বের সঙ্গে চলবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বড়াইকারী ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ -সুরা লোকমান: ১৮
নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন লোককে পছন্দ করেন না, যে বড় হওয়ার গৌরব করে ও অহংকার করে।’ -সুরা আন নিসা: ৩৬
শেষ কথা
যেহেতু আমি একজন মানুষ সেহেতু ভুল ঊর্ধ্বে আমি নই।
তাই প্রথমেই আল্লাহর কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আর আপনাদের কাছে যদি কোন ভুল ধরা পড়ে, সঠিক তথ্য দিয়ে (কুরআনের আয়াত) আমাকে ধরিয়ে দিবেন।
আমি অনেকগুলো আয়াতে দেখিয়েছি যেখানে সরাসরি জাহান্নামের শাস্তির কথা উল্লেখ আছে।
তবে অনেক আয়াত আছে যেখানে সরাসরি শাস্তির কথা উল্লেখ নেই। তবে জাহান্নামের শাস্তি আয়াত থাকতে পারে। তবে সরাসরি শাস্তির কথা না থাকলেও যদি কেউ এই আয়াতগুলোকে অগ্রাহ্য করে অবিশ্বাস করে এই কাজগুলো করে তাহলে সে নিঃসন্দেহে জাহান্নাম, অন্যথায় কি শাস্তি হতে পারে আল্লাহ ভালো জানেন।
তবে আল্লাহ বলেছেন শিরিক ব্যতীত সকল গুনা, ত্রুটি, দোষ, ভুল চাইলে ক্ষমা করে দিতে পারেন।
আল্লাহ বলেন…
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করা ক্ষমা করেন না, কিন্তু এর নিচে (শিরক ছাড়া অন্যান্য) যা কিছু আছে, তা তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর যে কেউ আল্লাহর সাথে শিরক করে, সে অবশ্যই গুরুতর পাপ করেছে। (সূরা আন-নিসা ৪:৪৮)
আল্লাহর সন্তুষ্ট লাভের উদ্দেশ্যে আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা তবে অবশ্যই নিজে নিজে অর্থ সহ কোরআন পড়ুন। এরপরের পর্বে থাকবে আল্লাহর নির্দেশ সংক্রান্ত আয়াতগুলো, তখনই আপনারা অনেকটা ক্লিয়ার হতে পারবেন। সেই পর্যন্ত আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন সঠিক তথ্যগুলো আপনাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারি। তবে নিষেধের মধ্যে যদি কোন কিছু বাদ পড়ে থাকে এবং আমার স্মরণে আসার সাথে সাথে আমি এখানে যোগ করে দিব ইনশাল্লাহ। আর আপনাদের নজরে যদি পড়ে কমেন্ট করে জানাবেন এটা আপনার আমার সকলের ঈমানী দায়িত্ব।
চূড়ান্ত ফাইনাল বলতে কোন কিছু নেই, কারণ আমার মত সামান্য মানুষ সেই কথা ভাবতেও ভয় লাগে, হয়তো অনেক নিষেদের আদেশ থাকতে পারে যা আমার চোখে পড়ে নাই, যখনই- যেভাবেই কোন নিষেধের পয়েন্ট আমার সামনে আসবে, সাথে সাথে এখানে যোগ করে দেবো ইনশাল্লাহ।
——-সানি হাসান