গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, দুদকের তদন্ত শুরু

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে বহিষ্কৃত গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অবৈধ প্রভাব বিস্তার এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বই ছাপার কাগজে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে।

এই অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

সূত্র অনুযায়ী, তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে গাজী সালাউদ্দিন বড় অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করেছেন। স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ, স্থানীয় সরকার এবং গৃহায়নসহ একাধিক মন্ত্রণালয় তার অতি সক্রিয় তদবিরে বিব্রত ছিল। এমনকি বহিষ্কারের দিন, গত ২১ এপ্রিল, তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও তিনি সরকারের অন্তর্বর্তী কমিটিতে কোনো পদে নেই, তবুও সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য নির্ধারিত অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি অভ্যুত্থানের সুযোগ নিয়ে পাস সংগ্রহ করে সচিবালয়ে প্রবেশ করেছেন এবং দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে একটি শক্ত বলয় তৈরি করেন।

২০২৪ সালের ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ৫৩ জেলায় একযোগে ডিসি (জেলা প্রশাসক) নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার দুই কর্মকর্তা — ২০তম বিসিএস ব্যাচের যুগ্ম সচিব কেএম আলী আজম ও ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদের নামও এসেছে আলোচনায়। ড. জিয়াউদ্দিনের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি ব্যাংক চেক উদ্ধার হয়, যা ডিসি নিয়োগের আগাম অর্থ হিসেবেই দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে এ দুই কর্মকর্তার গভীর যোগাযোগ ছিল বলেও জানা গেছে।

এদিকে এনসিটিবি প্রতিবছর প্রায় ৪০ কোটি বই ছাপে। স্বৈরাচার হাসিনার সময় বিদেশ থেকে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানোর রেওয়াজ থাকলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে দেশেই মানসম্পন্ন কাগজে বই ছাপানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই উদ্যোগে তানভীর দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন এবং কাগজ সরবরাহের নামে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন।

দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তানভীরের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *