
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছেন, নির্বাচন বিষয়ে তাঁর আগের মতই বহাল রয়েছে। তিনি মনে করেন, নির্বাচন ডিসেম্বর মাসেই হওয়া প্রয়োজন। আজ বুধবার ঢাকার সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে জানা গেছে।
অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান স্পষ্টভাবে বলেন, সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনো কার্যকলাপে অংশ নেবে না, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। ঢাকায় কর্মরত সেনা কর্মকর্তারা এই আয়োজনে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন, আর দেশের অন্যান্য জায়গায় অবস্থানরত কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, তিনি জাতীয় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বাহিনীর নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে। আসন্ন কোরবানির ঈদে দেশের মানুষ যেন নিরাপদে উৎসব পালন করতে পারে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান।
জেনারেল ওয়াকার সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করলেই সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যেতে হবে। অন্যথায় জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদে বাহিনী মোতায়েন থাকলে প্রতিরক্ষা সক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর টানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল বাহিনীকে অন্যায়ভাবে লক্ষ্যবস্তু করছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো যাতে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ‘মানবিক করিডর’ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্তে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। সবকিছুই রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
চট্টগ্রাম বন্দর সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত এবং তা রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমেই হওয়া প্রয়োজন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, এই বিষয়ে তাঁর কোনো জ্ঞান নেই এবং এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। জাতিসংঘের গত বছরের জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন রয়েছে, তা নিয়েও তাঁর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি বলে জানান তিনি।