ভারতের পুশইন ঠেকাতে কুমিল্লা সীমান্তে বিজিবির নজরদারি বৃদ্ধি

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

ভারতের দিক থেকে অব্যাহত পুশইনের আশঙ্কায় কুমিল্লা সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পুরো সীমান্তজুড়ে তারা এখন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা ও বিদেশি নাগরিকদের পুশইন চেষ্টার খবরের পর কুমিল্লা ১০ বিজিবি ব্যাটালিয়ন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

শনিবার (১৭ মে) সরেজমিনে কুমিল্লার বিবির বাজার ও গাজীপুর সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আগের তুলনায় সেখানে এখন বেশি সংখ্যক বিজিবি সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সংলগ্ন প্রায় ৯৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমিল্লা সীমান্তে এখনো কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। তবে সম্ভাব্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে গোলাবাড়ি সীমান্ত সংলগ্ন গোমতী নদী অঞ্চলেও।

এ মাসের শুরুতেই খাগড়াছড়ি, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ভারত থেকে লোকজন ঠেলে পাঠানোর ঘটনা ঘটে। তবে ১০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কঠোর নজরদারির কারণে কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত এমন কিছু ঘটেনি বলে জানায় তারা। সীমান্তে নিয়মিত সচেতনতামূলক সভা ও প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আনসার-ভিডিপি ও স্থানীয়দের সহায়তায় টানা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা হচ্ছে। সন্দেহজনক যেকোনো প্রবেশের চেষ্টা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিহত করা হচ্ছে।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ রাহুল জানান, আমরা স্থানীয়রাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে সতর্ক রয়েছি। কোনোভাবেই রোহিঙ্গা বা অবৈধ ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বিবির বাজার স্থলবন্দর সীমান্ত ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মো. রাসেল জানান, এ পর্যন্ত এই এলাকায় কোনো অবৈধ ভারতীয় বা রোহিঙ্গা নাগরিক প্রবেশ করেনি। বিজিবি, আনসার, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা সর্বক্ষণিক নজর রাখছে।

শাহাপুর সীমান্ত এলাকার একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সীমান্তের বাংলাদেশ অংশ ঘেঁষে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ফলে জানুয়ারির শুরু থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। কারণ, সেই সীমান্ত ঘেঁষেই অনেক কৃষকের ফসলি জমি রয়েছে। যদিও পরে তেমন কোনো জটিলতা হয়নি, তবে নতুন করে আবারও জনমনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, বিজিবির সক্রিয়তা থাকলে বড় কোনো সমস্যা হবে না বলে আমরা আশা করি।

কুমিল্লা ১০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর আলী এজাজ জানান, কুমিল্লা সীমান্তে এখনো কোনো পুশইনের ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। টহল কার্যক্রম দ্বিগুণ করা হয়েছে এবং আনসার সদস্যদেরও কার্যক্রমে যুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি সীমান্ত এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অবহিত করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকেও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এমনকি মসজিদে মসজিদেও সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে, এবং আমরা চেষ্টা করছি সীমান্তে কোনো প্রকার উত্তেজনা যেন না ছড়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *