ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা সমাধানে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ চায় পাকিস্তান

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা প্রশমনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত ভূমিকা অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। পাশাপাশি, তারা ওয়াশিংটনকে আহ্বান জানিয়েছেন—এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আলোচনার একটি পথ উন্মুক্ত করতে। এই তথ্য উঠে এসেছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘দ্য ডন’-এর এক প্রতিবেদনে।

ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, মে মাসের চার দিনের সংঘর্ষে প্রমাণ মেলে, ‘পেহেলগামের ঘটনাটি ছিল সাজানো’। তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব পাকিস্তান দিলেও ভারত সেই প্রস্তাবকে এড়িয়ে গিয়ে আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছে। “ভারতের হাতে যদি প্রকৃত কোনো প্রমাণ থাকত, তারা তা বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করত,”—বলেছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, “আমরা ধৈর্য ধরেছি। ৬ ও ৭ মে ভারতের হামলায় ৩৩ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় আত্মরক্ষার স্বার্থে ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়।” ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকৃত অর্থেই একজন শান্তিকামী এবং যুদ্ধবিরোধী নেতা।”

এদিকে, মার্কিন সফরে থাকা পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ওয়াশিংটনে প্রবাসী সাংবাদিকদের বলেন, “ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, যার ফলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।” তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প কমপক্ষে দশবার বলেছেন—এই উদ্যোগটি তার নিজের। আমি মনে করি, এই অবদান তাঁকে দিতেই হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র এই শান্তিরক্ষার প্রচেষ্টায় বড় ভূমিকা রেখেছে, আমি মনে করি, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংলাপের ক্ষেত্রেও ওয়াশিংটন সহায়ক হতে পারে। আমরা জানি বাস্তবতা কী এবং মার্কিন ভূরাজনৈতিক অবস্থান কেমন—আমাদের বার্তা হচ্ছে সত্য, যা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশনের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

বিলাওয়াল আরও কটাক্ষ করে বলেন, “ভারত নিজেকে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা স্তম্ভ বলে দাবি করে। কিন্তু তারা যদি নিজেদের যুদ্ধবিমান রক্ষা করতেই ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা কীভাবে অন্যদের নিরাপত্তা দেবে? চীনকে মোকাবিলায় যেটুকু কৌশলগত গুরুত্ব ভারতের ছিল, এখন তা পেপারওয়েটেরও কম।”

অন্যদিকে, ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দার বলেন, “আমরা সব সময় সংলাপের পক্ষে থাকি। তবে ভারতের নেতারা যেভাবে উত্তেজনাকর বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা একটি শান্তিপ্রিয় জাতি, আমাদের অগ্রাধিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন। তবে আমাদের মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা কখনোই আপসযোগ্য নয়।” তিনি এও বলেন, “দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সন্ত্রাসবাদ ছাড়া পানি বণ্টনসহ অন্যান্য ইস্যুকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদকে আলোচনার একমাত্র বিষয় বানানো চলবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *