
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একাধিক সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়ে নিজেদের দক্ষতা ও পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করছে। এতে উভয় দেশের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বাড়বে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরে তিনটি বড় যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। এই মহড়াগুলোর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্ব আরও গভীর হবে। এতে দুই দেশের অভিন্ন নিরাপত্তা লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। রোববার (২০ জুলাই) ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক প্রেস নোটে এই তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, এই কার্যক্রম শুধু বাংলাদেশ বা যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়াবে।
টাইগার লাইটনিং মহড়া
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিক যৌথভাবে এই মহড়া পরিচালনা করবে। এটি চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে সৈন্যদের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, জঙ্গলে অভিযান, আহতদের সরিয়ে নেওয়া এবং তাৎক্ষণিক বিস্ফোরক (আইইডি) প্রতিরোধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ মহড়া বাস্তব-নির্ভর প্রস্তুতিমূলক অনুশীলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দক্ষতা বাড়াবে।
টাইগার শার্ক ২০২৫
টাইগার শার্ক মহড়া ফ্ল্যাশ বেঙ্গল সিরিজের একটি অংশ। ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিশেষ বাহিনী একত্রে কাজ করে। এতে রয়েছে প্যাট্রোল বোট পরিচালনা, স্বল্পপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারে লক্ষ্যভেদ প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন যুদ্ধ কৌশল। এতে অংশ নেয় বাংলাদেশের স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ এবং প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড। এ মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে উভয় পক্ষের মধ্যে বাস্তব অভিযানের সক্ষমতা বাড়ে।
প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল
এই মহড়া বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে। এটি দুর্যোগকালীন সহায়তা এবং আকাশপথে সরঞ্জাম পরিবহনের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের সি-১৩০ বহরের মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। মহড়ায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার (SAR) এবং অ্যারোমেডিকেল কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এতে বাংলাদেশের মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ মোকাবিলা সক্ষমতা বাড়বে।
আরকিউ-২১ কর্মসূচি
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সেনা ও নৌবাহিনীর সঙ্গে মিলে মানববিহীন আকাশযান (UAS) সক্ষমতা গড়ে তুলছে। এতে একটি রেজিমেন্ট গঠন করা হয়েছে, যেটি নতুন আরকিউ-২১ ব্ল্যাকজ্যাক সিস্টেম পরিচালনা করবে। এই প্রযুক্তি বাংলাদেশকে সমুদ্রসীমা পাহারা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নতুন মাত্রা দেবে।
এই সম্মিলিত উদ্যোগ বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করছে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস।