সাবেক রাষ্ট্রপতি দেশে ফিরলেন চিকিৎসা শেষে

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশে ফিরেছেন দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ।

রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের (ফ্লাইট নম্বর টিজি-৩৩৯) একটি বিমানে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। বিমান থেকে হুইল চেয়ারে করে তাকে নামিয়ে আনা হয়। তখন তার পরনে ছিল শার্ট ও লুঙ্গি।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তিনি রাত ১টা ৪৫ মিনিটে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যান। তবে সংবাদ লেখা পর্যন্ত (রাত ২টা ২৫ মিনিট) ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তিনি তখনও হুইল চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছিলেন।

এর আগে গত ৬ মে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে থাইল্যান্ডে যান আবদুল হামিদ। তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার এবং শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার এই বিদেশ যাত্রা ঘিরে বাংলাদেশে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এমনকি তার নিজ জেলা কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে থাকা এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কিশোরগঞ্জে মামলার তদন্তকারী উপপরিদর্শক এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের এক সহকারী উপপরিদর্শককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তার বিদেশ যাত্রা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

পরবর্তীতে সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে, যার সভাপতিত্ব করছেন অধ্যাপক সি আর আবরার। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

উল্লেখ্য, আবদুল হামিদ আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ডেপুটি স্পিকার এবং স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল তার মেয়াদ শেষ হলে নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় বাস করছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে চলে যান। পরবর্তীতে তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই মামলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি বিকেলে কিশোরগঞ্জে আবদুল হামিদসহ শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ (জয়), সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল) এবং আরও ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর লতিবাবাদ এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে তহমুল ইসলাম (২৭)। তিনি নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানান, আন্দোলনের সময় আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন এবং সুস্থ হওয়ার পর এ মামলা দায়ের করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *