অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের ভাষণ নিয়ে বিএনপির ক্ষোভ, ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবি

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাজনৈতিক সৌজন্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে।

বিষয়টি আলোচনায় আসে শুক্রবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভার সভাপতিত্ব করেন। পরবর্তীতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম ভাগে যেকোনো দিনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

বিএনপির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণ হলেও সেটি মূলত জাতির উদ্দেশে রাজনৈতিক বক্তব্যে পরিণত হয়েছে। বক্তৃতায় বন্দর, করিডোরসহ এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়, যা অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত তিনটি ম্যান্ডেটের অন্তর্ভুক্ত নয়। এছাড়া ভাষায় রাজনৈতিক শালীনতা রক্ষা না করায় সভায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

সভায় আরও বলা হয়, এপ্রিলের প্রথম দিকে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হলেও ওই সময় আবহাওয়ার প্রতিকূলতা ও রমজান মাসের কারণে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অজুহাত সৃষ্টি হতে পারে। তবে প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়—এমন কোনো যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করেননি।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে জনগণ তাদের মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা গুম, হত্যা, কারাবরণসহ নানা দমন-পীড়নের মুখেও আন্দোলন চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের বিজয় অর্জিত হলেও নির্বাচন আয়োজনের বিলম্বে মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও আবহাওয়া বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন জরুরি বলেই সভায় মত দেওয়া হয়।

বিএনপির মতে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের কথা বলা হলেও বাস্তবে এটি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রভাবাধীন হয়ে উঠেছে। ফলে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত উপেক্ষিত হচ্ছে, যা নির্বাচনকে নিরপেক্ষ রাখার সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং দেশের জনগণ এতে স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *