আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘোষণা আসছে

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

জুলাই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

শনিবার (১০ মে) রাত ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, চলমান আন্দোলনের কারণে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে পরিষদের জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আসিফ নজরুল জানান, বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়। সংশোধনী অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল এখন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল, তাদের সহযোগী সংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, বিচারাধীন অবস্থায় দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং জুলাই আন্দোলন সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী, বাদী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম—বিশেষ করে সাইবার স্পেসে—সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন আগামী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টা থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেন।

তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা যমুনার সামনে জড়ো হন। রাত ১টার দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন, সঙ্গে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও।

পরদিন শুক্রবার (৯ মে) বাদ জুমা, যমুনার সামনে বড় সমাবেশের আয়োজন করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। সেখানে মঞ্চ গড়ে সরকারকে আলটিমেটামসহ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন তারা। বিকাল ৫টায় তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

এরপর অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে এবং ছাত্রলীগকে ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী আনার প্রস্তুতিও চলছে বলে জানানো হয়।

এছাড়া, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন নিয়ে জনমনে যে ক্ষোভ রয়েছে, সরকার তা লক্ষ্য করেছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

শনিবার (১০ মে) শাহবাগ মোড়ে আন্দোলন অব্যাহত থাকে, যার ফলস্বরূপ উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *