
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই-আগস্ট মাসের গণহত্যা মামলায় চলতি মাসের শেষ অথবা আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) আলজাজিরার জনপ্রিয় সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান ‘টক টু আলজাজিরা’য় ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ?’ শীর্ষক পর্বে এই দীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জুলাই বিপ্লব, শেখ হাসিনার ভারত পালিয়ে যাওয়া, পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতির চিত্র, রোহিঙ্গা সংকটসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।
সঞ্চালক যখন প্রশ্ন করেন যে, নিহত ও গুম হওয়া মানুষের জন্য যে বিচারের অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বে কোনো তদন্ত আহ্বান করা হবে কি না—উত্তরে ড. ইউনূস জানান, জাতিসংঘ ইতিমধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে সকল ঘটনা বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে, যা জনগণের জন্য উন্মুক্ত। ফলে, আলাদা করে নতুন কোনো উদ্যোগ নিতে হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, জাতিসংঘের তদন্ত ছাড়াও বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও স্বতন্ত্র গবেষণা ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে, যেখানে অপরাধের সমস্ত প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে। তিনি জানান, এখন দেশের আইনি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ প্রস্তুত, এবং শিগগিরই বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে। তার ভাষায়, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল, তারা কেউই দায় এড়িয়ে যেতে পারবে না।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস আরো বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং যুগান্তকারী নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যদি নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কারের তালিকা কম হয়, তাহলে ডিসেম্বরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে, যদি সংস্কার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, ড. ইউনূস বলেন, এ সিদ্ধান্ত অনেকাংশে আওয়ামী লীগের নিজস্ব। দলটি এখনও নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো স্পষ্ট অবস্থান ঘোষণা করেনি। পাশাপাশি, তিনি যোগ করেন, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়াও এখানে বিবেচ্য হবে। তবে তিনি সরাসরি বলেননি যে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তেই আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নির্ভর করছে।