
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে কিছু শর্ত দিয়েছেন, তা এখন স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ তিনটি সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, পুতিন চাচ্ছেন ন্যাটো যেন আর সম্প্রসারিত না হয়। এতে করে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য না করার নিশ্চয়তাও অন্তর্ভুক্ত। এমনকি তিনি এ বিষয়ে একটি লিখিত নিশ্চয়তা চাইতে পারেন বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বলে আসছেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ থামাবেন। জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পরও এই প্রতিশ্রুতি তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এ বিষয়ে নানা উদ্যোগও গ্রহণ করেন। একাধিকবার রাশিয়া, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প নিজেই পুতিনের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং তার প্রতি সমালোচনাও করতে শুরু করেছেন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর পুতিন জানান, তিনি একটি শান্তিচুক্তির লিখিত খসরা তৈরিতে সম্মত হয়েছেন। এতে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠার বিস্তারিত রূপরেখা থাকবে। রাশিয়া বলছে, এই খসরা প্রস্তুত করতে সময় লাগতে পারে। তবে এ আলোচনার মাঝেও রুশ বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে আরও অগ্রসর হচ্ছে বলে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ।
তিনটি রুশ সূত্র জানায়, পুতিন এখন পশ্চিমাদের কাছ থেকে একটি লিখিত প্রতিশ্রুতি চাইছেন যাতে বলা থাকবে—ন্যাটো সম্প্রসারিত হবে না। এর আওতায় ইউক্রেন, জর্জিয়া, মলডোভা এবং অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলোকে বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে, রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে, পশ্চিমা দেশে থাকা রুশ সম্পত্তি মুক্ত করতে হবে এবং ইউক্রেনে বসবাসকারী রুশদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে একটি সূত্র জানিয়েছে, পুতিন যদি বুঝতে পারেন তার শর্ত অনুযায়ী চুক্তি হচ্ছে না, তবে তিনি সামরিক অভিযানে আরও আগ্রাসী হবেন যাতে এই চুক্তি ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
রয়টার্স বিষয়টি নিয়ে ক্রেমলিনের মন্তব্য জানতে চাইলেও তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। একইভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দপ্তর থেকেও কোনো মন্তব্য আসেনি।
পুতিন এবং রুশ নেতারা বারবার বলছেন, সংঘাত নিরসনের জন্য মূল সমস্যাগুলো—বিশেষ করে ন্যাটোর সম্প্রসারণ ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন—সমাধান করতে হবে। আর কিয়েভের ভাষ্য, তাদের ন্যাটোতে যোগদানের অধিকার রাশিয়ার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত নয়। তারা বরং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দাবি করছে ভবিষ্যৎ হামলা ঠেকাতে।