
বিএনপিপন্থী বিশ্লেষক ডা. সায়ন্ত বলেন, এনসিপি জনগণের প্রত্যাশিত রাজনৈতিক সংস্কার আনতে ব্যর্থ হয়েছে; দলটির অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন তিনি।
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশিত রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপিপন্থী চিকিৎসক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. সাখাওয়াত সায়ন্ত। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তার প্রতিপক্ষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এনসিপির রাজনীতিতে আগমন প্রসঙ্গে ডা. সায়ন্ত বলেন, “বিএনপি, আওয়ামী লীগ কিংবা অন্যান্য দলের রাজনীতিতে ভুল-ত্রুটি থাকায় জনগণ একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন চেয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, এনসিপি নতুন দল হিসেবে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলবে, যা অন্যান্য দলগুলোকে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের চাপ তৈরি করবে। কিন্তু এনসিপি তা করতে পারেনি।”
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ’ ঘোষণা নিয়ে বিএনপির নিরবতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার একটি দিবস ঘোষণা করেছে বলেই সেটিকে বড় কোনো ইস্যু হিসেবে দেখতে হবে—এমন নয়। এটি বিএনপির কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে। গণহত্যা করে তারা পালিয়ে গেছে। এখন দেশে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে আনার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। বিএনপি সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করছে।”
সরকারের সঙ্গে এনসিপির সম্ভাব্য সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলে ডা. সায়ন্ত বলেন, “সম্ভবত সরকারের মধ্যে এক ধরনের আকাঙ্ক্ষা ছিল যে, একটি ভ্রূণ তৈরি করা হবে, তা বড় হয়ে উঠবে এবং পরে তাদের জমিদারিতে হিস্যা দেবে। এই উদ্দেশ্যে এনসিপির জন্ম হয়েছিল কি না, তা এখন প্রশ্নের বিষয়।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “সারজিস আলমের গাড়িবহর নিয়ে এলাকায় যেতে হয়—যা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কালচারেরই প্রতিফলন। তার দলের একজন নেতা শত কোটি টাকার বেশি দুর্নীতির দায়ে ‘দরবেশ’ উপাধি পেয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন। অন্য নেতা থানায় দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে আসামি ছাড়াতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন, আবার আরেক নেতা নারী কেলেঙ্কারিতে দলকে হেয় করেছেন। মাদারীপুরে এনসিপির কর্মীরা সদ্য দলের এক সদস্য সচিবকে কুপিয়েছে।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডনে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং যৌথ বিবৃতি দেওয়ার ঘটনাকে এনসিপি ভালোভাবে নেয়নি বলেও মন্তব্য করেন ডা. সায়ন্ত। তিনি বলেন, “তারা ভেবেছিল মাঠে বড় প্রভাব ফেলতে পারবে, কিন্তু তা পারেনি। তাই সরকারের কিছু অংশও এনসিপি নিয়ে তাদের আগের অবস্থানে নেই।”
সরকারের সমালোচনায় ডা. সায়ন্ত বলেন, বর্তমান সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই। তারা একের পর এক ভুল করছে। রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তা উসকে দিচ্ছে।
অন্য পত্রিকার হেডলাইন:
এনসিপি রাজনীতি পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়েছে: ডা. সাখাওয়াত সায়ন্ত — যমুনা টিভি