
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেস্ক রিপোর্ট
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কাশ্মিরসহ সকল বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার (১৪ মে) সিয়ালকোটের পাসরুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পরিদর্শনের সময় এই আহ্বান জানান তিনি। এসময় তিনি বলেন, পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ হিসেবে পাকিস্তান ও ভারতের উচিত পানি বণ্টনসহ গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে আলোচনায় বসা। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন।
সম্প্রতি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’ নামের অভিযান চালিয়েছিল, সেটির প্রশংসা করেন শাহবাজ। তিনি জানান, পেহেলগামের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান এই অভিযান চালায় এবং এতে ২৬টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে ছিল বিমানঘাঁটিও।
তিনি আরও জানান, ৬ ও ৭ মে সময়ে ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তান যে পাল্টা আঘাত হেনেছে, তা ভারতের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান বিমানবাহিনী একাধিক রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তিনি এই সামরিক প্রতিক্রিয়াকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের হার ও অপমানের প্রতিশোধ হিসেবেও উল্লেখ করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে শাহবাজ বলেন, “যদি ভবিষ্যতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়, তাহলে এর ফলাফল মারাত্মক হবে। আমরা যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত, আবার সংলাপের পথেও আগ্রহী। সিদ্ধান্ত ভারতের।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের শর্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পানি আমাদের সীমারেখা। পানি বন্ধের চিন্তাও করবেন না। পানি ও রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না। নীলাম-ঝিলাম প্রকল্পে আক্রমণ চালানো হয়েছে। বড় ক্ষতি হলে আমরা বাগলিহারসহ অন্যান্য বাঁধ ধ্বংস করতাম।”
শাহবাজ মোদিকে আবারও আলোচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “চলুন, এই আগুন নিভাই। কাশ্মির ও পানির ইস্যুতে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করি।”
পেহেলগাম হামলার পরে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে পানি চুক্তি স্থগিত করে, যার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
এদিকে, এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গা বলেন, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখার কোনো ধারা নেই। এটি হয় বাতিল করতে হবে, নয়তো নতুন কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে—দুই দেশের সম্মতিতে। বিশ্বব্যাংক এখানে কেবল মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে।
অন্যদিকে, বুধবার বিকেলে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় শাহবাজ দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গত দুই সপ্তাহে এটি ছিল জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে শাহবাজের তৃতীয় বার কথা।