
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
রাজধানীর শাহবাগে বাকবিতণ্ডার জেরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক নেতাকে ধাওয়া দিয়ে থানায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছেন আন্দোলনকারীরা। এই সময় ধাওয়াকারীদের ‘আওয়ামী লীগকে ধর’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে ওই নেতা শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে আশ্রয় নেন। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা ও আন্দোলনকারীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি পরে নিরাপদে থানার বাইরে চলে যান। রবিবার (১১ মে) রাতে এই ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, ওই ছাত্রদল নেতার নাম মো. তারিকুল ইসলাম তারিক। তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
তারিক জানান, তিনি একজন অতিথিকে নিয়ে শাহবাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন। তখন আন্দোলনকারীরা তাকে বাধা দেয় এবং পরবর্তীতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তারিকের ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আগের দিন রাতের পর আন্দোলনকারীরা শাহবাগ ত্যাগ করেছেন, তাই তিনি ভুল করে ওই পথ দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো সংঘর্ষে না জড়াতে নির্দেশনা রয়েছে।
বর্তমানে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের চারটি প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন। যাত্রীরা বিকল্প রুট ব্যবহার করছেন।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাতে ব্যারিকেড অতিক্রম করে এক মোটরসাইকেল আরোহী ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে থাকা তরুণী এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তারিককেও তর্কে অংশ নিতে দেখা যায়।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা তারিকের বিরুদ্ধে তাদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করলে তিনি থানায় ঢোকার চেষ্টা করেন। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে পুনরায় বাকবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে তাকে ধাওয়া করে আন্দোলনকারীরা। এরপর তিনি ওসির কক্ষে আশ্রয় নেন। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মুনসুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, একজন পথচারীকে আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দিয়েছিলেন এবং তিনি আত্মরক্ষার্থে থানায় প্রবেশ করেন। বিষয়টি ছিল একটি ভুল বোঝাবুঝি, কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
জানা যায়, তিনটি দাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা এখনো শাহবাগে অবস্থান করছেন—আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, জুলাইয়ের সনদের ঘোষণা এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে।
শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে তিনটার পর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা শাহবাগ ত্যাগ করলেও আহত ব্যক্তিরা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। একই মঞ্চে আছেন আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরাও। চারটি প্রবেশপথে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে, ফলে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফার্মগেট ও সায়েন্স ল্যাবের যানবাহন মৎস্য ভবন হয়ে হেয়ার রোড ব্যবহার করছে।