
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদককে রাতের অন্ধকারে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসার পর তাকে দুই বন্ধুর জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ও সিএফসি গ্রুপের নেতা ওয়াহিদুল আলমের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সামনে পুকুরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন।
জানা গেছে, মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চলন্ত একটি মোটরসাইকেল থেকে ওই নেতাকে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর ৪-৫ জন মিলে প্রায় দেড় মিনিট ধরে তাকে মারধর করে। তবে ঘটনাস্থল অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় কাউকে চেনা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে সায়েন্স ফ্যাকাল্টির রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে তারা দুর্ঘটনা ভেবেছিলেন, কিন্তু পরে দেখেন কয়েকজন মিলে ফেলে দেওয়া ব্যক্তিকে মারধর করছে। ভয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
মারধরের শিকার ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিএফসি গ্রুপের হয়ে বিভিন্ন মারামারির নেতৃত্ব দিতেন। গণঅভ্যুত্থানের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারবিরোধী নানা উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন।
তাকে নিয়ে আরও অভিযোগ রয়েছে, ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে ছাত্রলীগ কর্মীরা শাটল ট্রেনে হেনস্তা ও মারধর করে প্রক্টর অফিসে নেওয়ার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।
এছাড়া ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক শাহরিয়াজ মোহাম্মদকে মারধরের সময়ও তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন।
এ বিষয়ে চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা হয়ে এত অন্যায় করার পরও সে কীভাবে ক্যাম্পাসে আসার সাহস করে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কি কোনো দায়িত্ব নেই?”
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমরা শুনেছি, ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে মারধর করা হয়েছে। তবে কে বা কারা মারধর করেছে, তা আমাদের জানা নেই।”
সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন বলেন, “চোর ধরার খবর পেয়ে আমরা সায়েন্স ফ্যাকাল্টির দক্ষিণ পাশে যাই। ওই শিক্ষার্থী নিজেই জানায়, ‘ছাত্রলীগ’ করতাম বলেই তাকে মারধর করা হয়েছে। কিন্তু মারধরকারীদের সে চিনতে পারেনি।”
তিনি আরও জানান, আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়, তবে সে সেখানে যেতে রাজি হয়নি। পরে তার দুই বন্ধু ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছালে তাদের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।