
একটি অসহায় মা তার দেড় বছরের শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন, ঠিক তখনই তার ছেলের গলায় ছুরি ধরে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হন। ঘটনার পর চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশের পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক এক গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মাত্র দেড় বছরের ছেলের গলায় ছুরি ধরে মাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে ভুক্তভোগী নারী পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। এদিনই জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায়, একটি চা বাগানের পাশে ঘটনাটি ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) এবং সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
মামলার এজহার অনুযায়ী, ভুক্তভোগী গৃহবধূ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের জুটমিল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শুক্রবার রাতে অসুস্থ দুই বছরের সন্তানকে নিয়ে ইজিবাইকে করে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছালে পেছনের একটি ইজিবাইকে থাকা এক পরিচিত চালক নাম ধরে ডাকেন। তখন তিনি ইজিবাইক থামান। এরপর জনিসহ ছয়জন তাকে সড়কের পাশের চা বাগানে নিয়ে যায়।
চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় ছেলের গলায় ছুরি ধরে মা’কে পালাক্রমে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। দীর্ঘ নির্যাতনের পর ওই নারী অচেতন হয়ে পড়েন। ধর্ষকরা তাকে স্থানীয় একটি রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। রাত ১টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। রাত দেড়টার দিকে সন্তানসহ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী জানান, “আমার শিশুর গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমি চিৎকার করতে চাইলে মারধর ও হুমকি দেওয়া হয়। ছয়জন মিলে আমাকে ধর্ষণ করেছে। এখন আমার নিজের পরিচিতরাও আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি বিচার চাই।”
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কাশেম জানান, অচেতন অবস্থায় নারীটিকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক পরীক্ষা ও আলামত সংগ্রহ চলছে। আপাতত তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। জ্ঞান ফিরলে ভুক্তভোগী পুরো ঘটনা জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ধর্ষণের প্রমাণের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষাও প্রক্রিয়াধীন।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২৬ জুন কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রধান অভিযুক্তসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অন্য পত্রিকার হেডলাইন:
যুগান্তর: ছেলের গলায় ছুরি ধরে মাকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪