
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জন নাগরিকের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বৃহস্পতিবার (২২ মে) আইএসপিআরের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতির কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠান, থানা, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, চুরি, ডাকাতি ও গণপিটুনির মতো ঘটনাগুলো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফলে নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে পড়ে।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ প্রাণরক্ষার জন্য আশ্রয় চান। সেনাবাহিনী মানবিক বিবেচনায় তখন পরিচয় যাচাইয়ের চেয়ে জীবন রক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আশ্রয়প্রাপ্তদের মধ্যে ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন বেসামরিক কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ আরও ৫১টি পরিবার ছিল। সবমিলিয়ে মোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, সেই সময় আশ্রয়প্রার্থীদের রক্ষা করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশই ১-২ দিনের মধ্যে সেনানিবাস ত্যাগ করেন। তবে ৫ জনকে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট এ সংক্রান্ত একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আইএসপিআর থেকে প্রকাশিত হয় এবং ১৯৩ জনের একটি তালিকা (যার মধ্যে ৪৩২ জন পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ছিল না) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তখন বিষয়টি মীমাংসিত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
সেনাবাহিনী জানায়, এ সকল নাগরিককে মানবিক কারণে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল, কারণ তাদের জীবন বিপন্ন ছিল। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এখন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্টের অপচেষ্টা করছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া মোট ৬২৬ জনের (যার মধ্যে ৪৩২ জন পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্যও রয়েছেন) পূর্ণাঙ্গ তালিকা এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির সাথে প্রকাশ করা হয়েছে।
আইএসপিআর সকলকে বিভ্রান্তিকর প্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।