
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশে চলমান বর্ষণে পাহাড় ও টিলা ধসের মধ্যে সিলেট অঞ্চলের নানা এলাকায় এখনো বিপদসীমার মধ্যেই বসবাস করছেন প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। গত পাঁচ বছরে টিলা ধসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। কিন্তু তাতেও বন্ধ হয়নি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসতি স্থাপন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন টিলায় গড়ে ওঠা বাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ১ জুন সিলেটের গোলাপগঞ্জে টিলা ধসে প্রাণ হারায় একই পরিবারের চারজন। এমন ঘটনা নতুন নয়। গত বছর জুনেও নগরীর চামেলীবাগে টিলা ধসে মৃত্যু হয় স্বামী, স্ত্রী ও তাদের সন্তানের। সাম্প্রতিক পাঁচ বছরে শুধু এই এলাকাতেই টিলা ধসে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। প্রতিবছর প্রাণহানির ঘটনা বাড়লেও, পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণের প্রবণতা থামছে না। বরং বিপদের মধ্যেই বসবাসকারীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
বাংলাদেশে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে, টিলা ধসে মৃত্যুর পর প্রশাসনের তৎপরতা কিছুটা দেখা গেলেও সারা বছর জুড়ে কার্যত নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম জানান, “মূলত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত টিলা না কাটার জন্য। কিন্তু দেখা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর দুর্ঘটনার পরে এসে মামলা করে, আসামির তালিকা করে, অথচ যা ঘটার তা ততক্ষণে ঘটে গেছে।”
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ টিলা থেকে মানুষদের সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে এবং নির্দেশনা রয়েছে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ না দেওয়ার।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “আমাদের টিলা কাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। প্রতিটি উপজেলাতেই এ ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। মাসে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেন মানুষ এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় utility সুবিধা না পায় — অর্থাৎ, বিদ্যুৎ বা পানির সংযোগ না দেওয়া হয়।”
বাংলাদেশে গত দেড় দশকে সিলেট অঞ্চলে অন্তত ৬১টি টিলা পুরোপুরি কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে জেলার ৪১২টি পাহাড় ও টিলার মধ্যে কেবল ৩৫১টি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।