ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা, বিএনপির দুই যুবনেতা বহিষ্কৃত—দেশজুড়ে তীব্র ঘৃণা ও তোলপাড়

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় যুবদলের দুই নেতা আজীবন বহিষ্কৃত হয়েছেন।

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

বাংলাদেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চরম ক্ষোভ ও তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে এক ব্যবসায়ীকে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করার নির্মম ঘটনা। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে দলটি।

বহিষ্কৃতরা হলেন—কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক রজ্জব আলী পিন্টু এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবাহ করিম লাকি।

গত ৯ জুলাই, বুধবার বিকেল ৬টার দিকে হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের পাশের রাস্তায় সোহাগ ওরফে লাল চাঁদ (৩৯) নামের একজন ভাঙারি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে, পিটিয়ে এবং পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। এই ঘটনাটি পথচারীদের মোবাইলে ধারণ হয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা সারা দেশে চরম তোলপাড় সৃষ্টি করে।

নিহত সোহাগের বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে যুবদলের দুই নেতার নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয় আসামি হিসেবে।

এরপর ১১ জুলাই (শুক্রবার) রাতে যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনের গঠনতন্ত্রবিরোধী এবং শৃঙ্খলাভঙ্গমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় রজ্জব আলী পিন্টু ও সাবাহ করিম লাকিকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই দুই নেতার কোনো অপকর্মের দায়ভার সংগঠন নেবে না। সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন তারা বহিষ্কৃতদের সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখেন। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ঘটনার পরপরই ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে রয়েছেন মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১), তারেক রহমান রবিন (২২) এবং আরও দুইজন। ডিএমপির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারদের একজনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এই হত্যাকাণ্ডটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে কাজ করেছে পুরনো শত্রুতা ও ব্যবসায়িক বিরোধ। যেসব ব্যক্তি এ ঘটনায় জড়িত, তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *