
নিউ ঢাকা টাইমস :ডেক্স রিপোর্ট
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে ভারত। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে আসা সব ধরনের পণ্যের আমদানি সাময়িকভাবে সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কোনো ব্যতিক্রম ঘটলে, তা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বিবেচনা করা হতে পারে।
এর ফলে ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত দিয়ে ভারতের একমাত্র স্থলপথে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, যার ফলে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে ভারতের আমদানির পরিমাণ ছিল মোট আমদানির ০.০০০১ শতাংশেরও কম।
গত ২২ এপ্রিল বৈসারণ উপত্যকায় সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান কমপক্ষে ২৬ জন, যাদের মধ্যে ছিলেন একজন নেপালি পর্যটক ও একজন স্থানীয় ঘোড়াচালক। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করেছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে।
ঘটনার পর ভারত ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করে দেয়, যার আওতায় পাকিস্তান সিন্ধু নদীর পানি পেত। ভারত অভিযোগ করেছে, সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তান নিয়মিত সন্ত্রাসে সহায়তা করছে এবং এর জবাবে তারা পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে — যা পাকিস্তানের কোটি মানুষের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়াও, ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের জারি করা সব ধরনের ভিসা বাতিল করেছে। বর্তমানে যারা ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমনকি চিকিৎসা ভিসাধারীরাও এর আওতায় পড়েছেন।
উত্তরে পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, এমনকি ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি বাতিলের বিষয়েও ভাবছে। দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কও এখন সংকটাপন্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, যতদিন না জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাস সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়, ততদিন পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত কোনো আলোচনা হবে না।