পুতিনের প্রস্তাব নাকচ করে খেসারত দিচ্ছে ইরান

রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে আগ্রহ দেখায়নি ইরান। এখন সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে আমেরিকার হামলার মুখে পড়েছে তেহরান। রাশিয়া বলছে, ইরান আলোচনাই চায়নি।

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট।

ইরানকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যৌথ প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছিল রাশিয়া; কিন্তু তেহরান তখন সে বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি। এমনটাই জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বৃহস্পতিবার রুশ বার্তা সংস্থা তাস আয়োজিত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রধানদের এক বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘আমরা একসময় আমাদের ইরানি বন্ধুদের সঙ্গে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তখন আমাদের অংশীদাররা বিশেষ কোনো আগ্রহ দেখাননি।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে কৌশলগত চুক্তির সময় ইরানকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। পুতিন বলেন, ‘আমাদের বন্ধুদের (ইরান) সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে চুক্তিতেও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কোনো ধারা ছিল না। এটা দ্বিতীয় বিষয়। তৃতীয় বিষয় হলো, আমাদের ইরানি বন্ধুরাও আকাশ প্রতিরক্ষা চাইছে না। বাস্তবতা হলো, এ নিয়ে আলোচনার মতোও কিছু নেই।’

গত মে মাসে মস্কো ও তেহরানের মধ্যে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি অনুমোদন করে ইরানের পার্লামেন্ট। পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ১৭ জানুয়ারি এই কৌশলগত দলিলে স্বাক্ষর করেন।

এদিকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। একই সঙ্গে এই হামলাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেছে মস্কো।

রোববার (২২ জুন) রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যে কোনো যুক্তিই দেখানো হোক না কেন, একটি সার্বভৌম দেশের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর মতো এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার স্পষ্ট লঙ্ঘন।’

বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ঝুঁকি ‘অত্যন্ত’ বাড়িয়ে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ইরানের যে তিন গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছে, সেগুলো হলো—নাতানজ, ফোরদো ও ইসফাহান। এগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল কেন্দ্রবিন্দু, যেগুলোর ওপর আগেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল।

স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) মধ্যরাতে ইসরায়েলের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে ইরানের তিনটি উচ্চ-নিরাপত্তাসম্পন্ন পারমাণবিক স্থাপনায় তীব্র বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

হামলার পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি রোববার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন ও পরমাণু অস্ত্র প্রসার রোধ চুক্তির (এনপিটি) সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং এই হামলার ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

তিনি বলেন, ইরান নিজেদের সুরক্ষার জন্য যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার রাখে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক পৃথক বিবৃতিতে জানায়, ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র প্রসার রোধ চুক্তির চরম লঙ্ঘন করেছে।’


✅ অন্যান্য পত্রিকার হেডলাইন:

AP News: Nations react to US strikes on Iran with many calling for diplomacy

The Guardian: Donald Trump says US has attacked three Iranian nuclear sites and ‘totally obliterated’ them

Time: ‘Gravely Alarmed’ World Leaders React After U.S. Strikes Iran

The Times (UK): Israel-Iran live: Tehran threatens to close Strait of Hormuz

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *