পুলিশের সামনেই সাংবাদিকে প্রকাশ্যে পেটাল দুর্বৃত্তরা, ইট দিয়ে পা থেঁতলে দিল

ফুটেজে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রকাশ্য দিবালোকে একজন সাংবাদিককে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে মারধরের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।


নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

বাংলাদেশের গাজীপুর মহানগরের সদর মেট্রো থানার কাছেই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্যে এক সাংবাদিককে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর ও ইট দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। আহত সাংবাদিক প্রাণভিক্ষা চাইলেও কেউ কর্ণপাত করেনি।

এই নির্মম হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে, গাজীপুর সদর মেট্রো থানার কাছাকাছি এলাকায়। যদিও ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে আজ ছড়িয়ে পড়ে।

হামলার শিকার ওই যুবকের নাম আনোয়ার হোসেন। জানা গেছে, তিনি দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার একজন সাংবাদিক।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুর রেললাইনের উত্তর পাশে রেলের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে এক অবৈধ ফলের মার্কেট। সেই দোকানগুলোর সামনের রাস্তায় আনোয়ার হোসেনকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত টেনেহিঁচড়ে নিয়ে মারধর করছে।

কেউ লাঠি দিয়ে মারছে, কেউ লাথি দিচ্ছে। কিছু দূর নিয়ে যাওয়ার পর একজন দুর্বৃত্ত ইট নিয়ে এসে একাধিকবার তাঁর পায়ে ও শরীরে আঘাত করে। এরপর তাঁকে নির্মমভাবে মাটিতে ফেলে বুকের ওপর লাফ দেয়। এমনকি ইট দিয়েই তাঁর পা থেঁতলে দেওয়া হয় এবং টেনেহিঁচড়ে ঘোরানো হয়।

এই নৃশংস ঘটনাটি অনেককে পুরান ঢাকায় পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।

ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও প্রথমে তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে যখন ইট দিয়ে পা থেঁতলে দেওয়া হয়, তখন একজন পুলিশ সদস্য এগিয়ে যান। পরে দেখা যায়, পুলিশ ওই আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে।

এই নির্মমতার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজসহ সাধারণ মানুষ গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আহত আনোয়ার হোসেনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর পায়ে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে এবং শরীরজুড়ে রয়েছে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন।

এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেনের মা আনোয়ারা স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি অভিযোগে কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেছেন।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান জানান, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তিনি দেখেছেন এবং ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “কাউকে দোষী মনে হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে না। আমরা অভিযুক্তদের দ্রুত শনাক্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *