ভাজরা গ্রামে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণে প্রবাসীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ, অপপ্রচারের প্রতিবাদ

মাসুম বিন ইদ্রিস, দাউদকান্দি:
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সদর উত্তর ইউনিয়নের ভাজরা গ্রামে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণ নিয়ে সম্প্রতি কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে—এ অভিযোগ এনে দুবাই প্রবাসী হাজী মন্টু মিয়া স্পষ্ট প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালে নিজ অর্থায়নে ভাজরা থেকে বাহেরচর সড়কের সংযোগস্থল থেকে মন্টু হাজির বাড়ি পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ একটি মাটির রাস্তা নির্মাণ করেন তিনি, যা এলাকার মানুষের চলাচল ও কৃষিপণ্য পরিবহনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এছাড়া চলতি বছর, ভাজরা আইয়ুব আলী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের সুবিধার জন্য খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজও শুরু করেন এই প্রবাসী।

প্রবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণের খবর একটি স্থানীয় ব্লগ পেইজে প্রচারিত হয়। যদিও ওই ভিডিওতে সরকারি অর্থায়নে ভাজরা-বাহেরচর পাকা সড়কের নির্মাণ কার্যক্রমের কিছু দৃশ্যও উঠে আসে, সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল না যে পাকা সড়কের কাজটিও প্রবাসীর উদ্যোগে হচ্ছে।

তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে হাজী মন্টু মিয়ার নামে সরকারি প্রকল্পের কৃতিত্ব দাবি করা হয়েছে বলে প্রচারিত হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শরীফ আখন্দ সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে মাটির রাস্তা নির্মাণে প্রবাসীর ভূমিকাকেও অস্বীকার করেন।

কিন্তু সরেজমিন অনুসন্ধানে ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেছে। এলাকার নারী-পুরুষরা জানিয়েছেন, হাজী মন্টু মিয়া সম্পূর্ণ নিজের টাকায় রাস্তা তৈরি করেছেন এবং ব্রিজ নির্মাণের কাজও নিজস্ব অর্থায়নে চলছে। কোনো সরকারি অর্থায়নের সহযোগিতা তিনি নেননি। তারা আরও জানান, মন্টু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ, আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন মানবিক কাজে যুক্ত রয়েছেন।

মিডিয়ায় প্রচারিত বিভ্রান্তির প্রতিবাদে দুবাই থেকে পাঠানো ভিডিও বার্তায় হাজী মন্টু মিয়া বলেন, “আমি কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, কেবলমাত্র এলাকার মানুষের কল্যাণে নিজস্ব অর্থে এই কাজ করেছি। সরকারি কোনো প্রকল্পের কৃতিত্ব দাবি করার প্রশ্নই ওঠে না। যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন, আমি তাদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই এবং প্রকৃত তথ্য প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।”

স্থানীয় ব্লগারও নিশ্চিত করেছেন, ব্লগে কেবল মাটির রাস্তা ও ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত ব্রিজের কথা বলা হয়েছে, সরকারি প্রকল্পের কাজকে প্রবাসীর কৃতিত্ব হিসেবে দেখানোর কোনো চেষ্টা করা হয়নি।

এদিকে দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমুল সরকার জানান, আইয়ুব আলী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন খালের ওপর নির্মিতব্য ব্রিজে কোনো সরকারি অর্থায়ন নেই।

স্থানীয়দের মধ্যে প্রকৃত সত্য প্রকাশের দাবিতে জোরালো দাবি উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *