ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র—ভারত ও পাকিস্তান। এই সমঝোতা এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি মধ্যস্থতায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি লিখেছেন, “আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে একমত হয়েছে। উভয় পক্ষের শুভবুদ্ধির প্রয়োগে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোয় তাদের অভিনন্দন জানাই।”

ট্রাম্পের ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশ থেকেই পৃথক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানানো হয়। উভয় পক্ষই জানায়, যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “ভারত ও পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তান বরাবরই এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে কাজ করেছে এবং আমাদের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বিষয়ে কখনোই আপস করা হয়নি।”

দিল্লিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, শনিবার বিকেলে পাকিস্তানের সামরিক অপারেশনসের মহাপরিচালক ভারতের সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে ফোন করে আলোচনার প্রস্তাব দেন। উভয় পক্ষ সম্মত হয় যে, ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ ও সমুদ্র—সব ফ্রন্টে সামরিক অভিযান বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে উভয় দেশ তাদের সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা শুরু হয়েছিল ২২ এপ্রিল, যখন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে আসছিল।

এর জের ধরে ভারত গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের নয়টি স্থানে অভিযান চালায়। পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানায়, ওই রাতে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে।

পরবর্তীতে পাল্টাপাল্টি হামলা চলতে থাকে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, শনিবার পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস’ নামে ভারতের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে পাঞ্জাবের অমৃতসরের বিয়াস এলাকায় পাল্টা অভিযান চালায়, যেখানে ভারতের ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার রয়েছে।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা দুই দেশের শান্তি আলোচনায় বড় একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *