
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ২০২৩ সালের ৭ জুনে করা একটি পোস্ট ফের শেয়ার করে ভারতীয় সেনাপ্রধানের বাংলাদেশ সফর এবং সেনা প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত কৌশলগত ভাষ্য নিয়ে মন্তব্য করেন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ‘উল্ফল্যান্ড’ ও ‘গ্রীনল্যান্ড’ নামের কাল্পনিক রাষ্ট্রের মাধ্যমে যে কৌশলগত অনুশীলন চলে, তা আসলে প্রতিবেশী ভারতের সামরিক শক্তির প্রতিচ্ছবি বহন করে।
মুস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন, “ভারতীয় অফিসাররা যখন আমাদের এসআইএন্ডটি বা অন্যান্য সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আসতেন, তারা বুঝতেন উল্ফল্যান্ড বলতে ভারতকেই বোঝানো হচ্ছে, যদিও মুখে তারা কিছু বলতেন না।” এরপর তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ মনে করেন তিনি, কারণ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের দাবি থাকলেও বাস্তবে তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) প্রতিবছর বাংলাদেশে ৪০ থেকে ৬০ জন নাগরিককে হত্যা করে।
তিনি আরও জানান, ভারত বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধা নিচ্ছে, অথচ বাংলাদেশের ব্যবসায়িক ঘাটতি বেড়েই চলেছে। তার মতে, এই নতজানু কূটনৈতিক নীতির প্রভাব সেনাবাহিনীতেও পড়েছে।
তিনি বলেন, ভারতের নতুন সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের একটি ম্যুরাল রয়েছে, যা আরএসএস এবং অন্যান্য মৌলবাদী সংগঠনের চরম লক্ষ্যকে প্রতিফলিত করে—একটি এমন অঞ্চল যেখানে মুসলমানদের ভোটাধিকার থাকবে না।
২০১১ সালের একটি অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, তখন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ছিলেন এবং ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেন। এর পরবর্তী বছর বাংলাদেশি একটি সেনা দল ভারতের আগ্রায় গিয়ে জানতে পারে যে ভারত তাদের ১৬টি পদাতিক ব্যাটালিয়নকে প্যারা ইনফ্যান্ট্রিতে রূপান্তর করছে, যারা প্যারাড্রপ পদ্ধতিতে শত্রুপক্ষের পেছনে আক্রমণ চালাতে পারবে।
এ বিষয়ে সেনাসদর থেকে তার কাছে তথ্য চাওয়া হলে তিনি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে বাংলাদেশে প্রতি বছর সৈন্যদের দুইবার প্যারাজাম্প করানোই কঠিন, সেখানে সাধারণ ব্যাটালিয়নকে প্যারা ইউনিট বানানো কতটা যৌক্তিক? তিনি তার বিশ্লেষণী প্রতিবেদনেও জানান, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত কমান্ডো রয়েছে। ফলে নতুন ইউনিট গঠনের প্রয়োজন হলেও তা কমান্ডো থেকে হওয়া উচিত, সাধারণ পদাতিক থেকে নয়।
পোস্টের শেষে তিনি লিখেছেন, “সত্য সমাগত, মিথ্যা বিতাড়িত। চলবে…”
এই লেখার সঙ্গে তিনি সিলেট পানিছড়া ড্রপ জোনে নতুন প্যারাট্রুপারদের ব্রেভেট পরিধানের একটি ছবিও যুক্ত করেন।
সূত্র: লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান এর ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইল। এবং জনকণ্ঠ