
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালায় পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে।
জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও ভারতের অভ্যন্তরে। পাল্টাপাল্টি এই হামলা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় উভয় দেশ। এই যুদ্ধবিরতির ঘটনাকে বিজয়ের নিদর্শন হিসেবে চিহ্নিত করে পাকিস্তান উদযাপন করে ‘ইয়াওম-ই-তাশাক্কুর’ বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ দিবস।
শুক্রবার (১৬ মে) ইসলামাবাদে আয়োজিত এই বিশেষ আয়োজনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শেহবাজ শরিফ বলেন, অতীতে ভারত ও পাকিস্তান তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই উভয় পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর ডন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর। যদি যুদ্ধ শুরু হয়, তবে তা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। এমনকি পরমাণু যুদ্ধের পর কোনো ইতিহাস লেখার মানুষই বেঁচে থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ৯ মে গভীর রাতে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালায়। তিনি তখনই সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ও অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পাল্টা প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাকিস্তানি বিমানবাহিনী এরপর ভারতের পাঠানকোট ও উদমপুরসহ বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
শেহবাজ দাবি করেন, পাকিস্তান ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ৩টি ছিল অত্যাধুনিক রাফাল। দেশীয় প্রযুক্তি ও চীনা সহায়তায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী এমন জবাব দিয়েছে, যা সারা বিশ্বে আলোড়ন তোলে।
‘ইয়াওম-ই-তাশাক্কুর’ উদযাপন শুরু হয় শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ইসলামাবাদে ৩১টি তোপধ্বনির মাধ্যমে। প্রাদেশিক রাজধানীগুলোতে ২১টি তোপধ্বনি দেওয়া হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, র্যালি ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত কাপুরুষের মতো রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে আমাদের নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে। তবে আমরা তাৎক্ষণিক জবাব দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি, শক্তিশালী প্রতিপক্ষও মাথা নত করতে বাধ্য হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সাহসী সেনারা উপযুক্ত জবাব দিয়েছে এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এক গর্বের অধ্যায় রচনা করেছে।
অনুষ্ঠান শেষে শেহবাজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সঙ্গে নিয়ে রাওয়ালপিন্ডির সামরিক হাসপাতালে যান, যেখানে আহত সৈনিক ও নাগরিকদের খোঁজখবর নেন।
পরে তিনি শহিদ স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং তার আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
শেহবাজ বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব, সাহস ও দায়িত্ববোধের কারণেই আমরা বিজয়ী হয়েছি। এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।