
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদের (এমএনএ/এমপিএ) মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) নবগঠিত অধ্যাদেশে এদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ মে) রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ থেকে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
অধ্যাদেশ অনুসারে, শুধুমাত্র প্রবাসী সরকার নয়, আরও চারটি শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধাকেও ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এই চার শ্রেণি হলো—
১. বিদেশে অবস্থানরত পেশাজীবীরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা রেখে বিশ্বজনমত গঠনে কাজ করেছেন।
২. মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী, দূত ও অন্যান্য সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা।
৩. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কলাকুশলী এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংবাদিকরা।
৪. স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০২২-এ যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, নতুন অধ্যাদেশে তাদের ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করায় পূর্বের বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচিতি বাতিল হয়েছে।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের স্বীকৃতি বাতিলের পর বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনার শর্তে অধ্যাদেশটি অনুমোদন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের ভিত্তিতে এটি জারি করা হলো।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, জামুকার প্রণীত খসড়া থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত সংজ্ঞায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের আলোকে প্রথম অনুমোদনের পর খসড়ায় দ্বিতীয় দফায়ও পরিবর্তন আনা হয়।
অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, তারা হচ্ছেন সেই ব্যক্তিরা যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করা ব্যক্তিরা, যারা সরাসরি পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী, ইপিআর, পুলিশ, মুক্তিবাহিনী, প্রবাসী সরকার স্বীকৃত বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্য, নির্যাতিত বীরাঙ্গনা এবং যুদ্ধকালীন চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা সহকারীরা।
নতুন সংজ্ঞায় ‘মুক্তিযুদ্ধ’ বলতে বোঝানো হয়েছে— ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধ।