
বাংলাদেশে চাঁদাবাজি মোকাবিলায় সাহসী ভূমিকার পরিণতি জানিয়ে পুলিশের একজন সহকারী সুপার বলেছেন, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই তাকে বদলি করা হয়।
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশের গাজীপুরে চাঁদাবাজি নিয়ে সরাসরি অবস্থান নেওয়ার জেরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বদলি হতে হয়েছে—এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী সুপার (এএসপি) দিদার নূর।
শনিবার (১২ জুলাই) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তিনি লিখেছেন, “আমি যখন গাজীপুরের কোনাবাড়ী জোনে কর্মরত ছিলাম, তখন চোখে দেখেছি কোনাবাড়ী, কাশিমপুর এলাকায় এমন কোনো জায়গা নেই, যেখান থেকে চাঁদাবাজি হয় না। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে ময়লার গাড়ি—সবখানে চাঁদাবাজদের দাপট ছিল। প্রতিদিন একটি মাত্র ফুটপাত থেকেই লাখ লাখ টাকা চাঁদা ওঠানো হতো।”
দিদার নূর জানান, “আমি একবার চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশনে যাই। দোকানদারদের ফুটপাতে বসতে না দেওয়ার উদ্যোগ নেই, যাতে করে কেউ সেখানে চাঁদা তুলতে না পারে। এই বিষয়ে আমি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসলেও, আমি কারো কথায় কর্ণপাত করিনি। কিন্তু ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে দেখি আমাকে বদলি করে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “চাঁদাবাজদের সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে, পুলিশ চাইলেও তাদের পুরোপুরি ঠেকাতে পারে না। উপর মহল থেকে চাপ আসে। অনেক পুলিশ সদস্যই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে লড়তে চায়, কিন্তু সেই অদৃশ্য চাপে পেরে ওঠে না।”
দিদার নূরের বক্তব্য অনুযায়ী, “বাংলাদেশে পুলিশের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজদের রুখতে হলে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাধীন পুলিশ কমিশন দরকার। যদি পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে এসব চাঁদাবাজি-গুণ্ডাবাজি একদিনেই বন্ধ করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “এই নৃশংস পরিস্থিতির বিচার দাবির পাশাপাশি এখন সময় এসেছে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের দাবিতে জনমত গড়ে তোলার। কারণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত না হলে, এই দুষ্টচক্র কখনোই থামবে না।”