
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পরিচয়ে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করার ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী পরিবার থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেয়ার পর ওই ছাত্রলীগ নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে এনসিপির স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন, অভিযুক্তদের কেউই তাদের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন।
ঘটনার পর, ৫ জুন বুধবার দুপুরে শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন অপহৃত ছাত্রলীগ নেতা আল রিয়াদ আদনান অন্তরের স্ত্রী ইসরাত হাজান আঁখি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল বারিক।
জানা গেছে, ২৮ মে রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর পৌর শহরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মালেক মাস্টার মার্কেটের সামনে থেকে অপহরণ করা হয় আল রিয়াদ আদনান অন্তরকে। বয়স ৩৫ বছর। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন।
অভিযুক্তদের নাম—মো. উজ্বল হোসাইন (২২), আলিফ মোড়ল (২০), কাইফাত মোড়ল (২৪), মারুফ খান (২২) ও মিঠুন (২০)। অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২৮ মে রাতে ওষুধ কিনে বাসায় ফিরছিলেন অন্তর। তখন অভিযুক্তরা নিজেদের এনসিপির নেতা পরিচয় দিয়ে তার পথরোধ করে, এরপর টেনে হিঁচড়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। একটি নির্মাণাধীন ঘরে হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
ইসরাত হাজান আঁখি জানান, ঘটনার সময় অভিযুক্ত আলিফ মোড়ল তার স্বামীকে নির্যাতনের পর তাকে ফোন করে। তখন অন্তর আর্তনাদ করে বলে “আমাকে বাঁচাও”। অভিযুক্তরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরদিন ভোরে এমসি বাজার এলাকায় গিয়ে ২ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। পরে আরও ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে দেওয়া হয় এবং এরপরই অন্তরকে একটি নির্জন স্থানে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। পুরো ঘটনার অডিও-ভিডিও রেকর্ড এবং সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে বলে জানান আঁখি।
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় এনসিপি নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযুক্তরা এনসিপির কেউ নন। এনসিপির শ্রীপুর উপজেলা আহ্বায়ক প্রার্থী আবু রায়হান মেজবাহ জানান, অভিযুক্তরা সম্প্রতি মিছিলে অংশ নিয়ে ছবি তুলে নিজেদের নেতা দাবি করলেও, বাস্তবে তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
ঘটনার পর অভিযুক্ত আলিফ মোড়ল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে অপহরণ এবং মুক্তিপণ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি বলেন, মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়ে তিনি দুদফায় মোট ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছেন এবং ১০ হাজার টাকা ভাগ পেয়েছেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তবে বাদী ও ভিকটিমের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে এখনও বিস্তারিতভাবে কথা বলা যায়নি।