নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানিয়েছেন, দেশে তথাকথিত ‘পাকিস্তানপন্থি’ বলে কিছু নেই। মঙ্গলবার (১৩ মে) দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি সতর্ক করেন, ইন্ডিয়ান রেটোরিক বর্তমানে জুলাই ঐক্যে নতুন বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের কিছু মিডিয়া প্রায়শই বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবিরোধী ছাত্র ও জনসাধারণকে ‘পাকিস্তানপন্থি’ হিসেবে উপস্থাপন করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে কোনো ভিন্নমতের লোককে এমন ট্যাগ দেওয়া মানেই ভারতীয় বর্ণনাকে এই দেশে পুনরায় সক্রিয় করার চেষ্টা। তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় এসব ইন্ডিয়ান রেটোরিক ব্যবহার করে বিরোধীদের দমন ও হত্যার দৃশ্য অতীতে দেখা গেছে।
মাওলানা আজিজুল হক আরও বলেন, আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ-পরবর্তী বাংলাদেশে সেই পুরনো পশ্চাৎমুখী রাজনৈতিক ধারায় ফিরে যেতে চাই না আমরা। এখন যেকোনো ভারতীয় বক্তব্য বা বয়ান দেশের অভ্যন্তরে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে এবং এতে ভারতীয় আধিপত্যবাদের অনুপ্রবেশ সহজ হতে পারে। এজন্য তিনি সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে বাংলাদেশের আলেম-ওলামা এবং সাধারণ মুসলমান সবসময় জুলুম ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এসেছে। হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বঞ্চিত মুসলমানের অধিকার রক্ষায় সাতচল্লিশে দেশভাগ ঘটে, এবং এরপর পাক সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে একাত্তরে জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। সেই ধারাবাহিকতায় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ঘটে, যার ফলে ফ্যাসিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের পতন হয়।
তিনি বলেন, সাতচল্লিশ, একাত্তর এবং চব্বিশ— এই তিনটি ঘটনা আমাদের জাতির সংগ্রামী ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিটির বিপরীতে ভারতের মুসলিমবিরোধী ন্যারেটিভ আছে, যা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। কোনো ঘটনাকে উপেক্ষা না করে আমাদের উচিত সম্মিলিতভাবে ইতিহাস ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে এগুলোকে গ্রহণ করা।
বিবৃতির শেষভাগে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনকালে ভারতীয় ন্যারেটিভ ব্যবহার করে দেশের শীর্ষ ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি আমরা হতে দিতে পারি না। আমাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশে কোনো ‘পাকিস্তানপন্থি’ শক্তি নেই। বরং একটি সুদৃঢ় ‘বাংলাদেশপন্থি’ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে, আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।