
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
দেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ঘিরে অসন্তোষের মধ্যেই সোমবার এক নতুন মোড় নেয় পরিস্থিতি। অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা এক অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে এবার যুক্ত হয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা বিক্ষোভে অংশ নেন এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
গত আগস্টে ৮৪ বছর বয়সে ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। ছাত্র আন্দোলনের চাপে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন এবং এখনো সেখানে অবস্থান করছেন। নির্বাচন সামনে রেখে সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে ইউনূস প্রশাসন, তবে বেসামরিক কর্মচারী, শিক্ষক ও রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ দিন দিন বাড়ছে।
রোববার প্রকাশিত একটি অধ্যাদেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এ অধ্যাদেশকে ‘দমনমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে সোমবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজপথে অবস্থান নেন। একইসঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে অংশ নেন।
এর আগে এনবিআরের কর্মীদের আন্দোলনের মুখে রাজস্ব বোর্ড ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করে সরকার। এরপর সেই ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়ে, যখন একটি গুজবে বলা হয় ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন। যদিও তার উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্পষ্ট জানান, তারা কোথাও যাচ্ছেন না এবং নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছেন।
২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বললেও, বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো ডিসেম্বরেই ভোটের দাবি জানাচ্ছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় এই দাবির প্রতি সমর্থন জানান। সব মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে।
সরকারি দল আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় তারা পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে জানা গেছে। প্রেস সচিব শফিকুল আলম মন্তব্য করেছেন, “আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে আছি” এবং এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছেন।