
নিউ ঢাকা টাইমস ডেক্স রিপোর্ট
১ জুন ২০২৫, আন্তর্জাতিক ডেস্ক – সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে অস্বাভাবিক গতিতে অগ্রগতি দেখা দেওয়ায় নতুন করে আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি সামনে আসে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা IAEA-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে, যেখানে বলা হয়েছে যে, গত তিন মাসে ইরান তাদের ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ প্রায় ৫০% বৃদ্ধি করেছে।
IAEA-এর প্রতিবেদন: বোমা তৈরির মতো পর্যায়ে ইউরেনিয়াম
IAEA জানিয়েছে, ইরান বর্তমানে ৪০৮.৬ কেজি ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সংরক্ষণ করছে, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ২৭৪.৮ কেজি। এই মাত্রার ইউরেনিয়াম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য উপকরণ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব।
গোপন স্থানে অনিয়মিত কার্যক্রম
IAEA আরও উল্লেখ করে যে, ইরান ঘোষণা না দিয়েই তিনটি স্থানে পারমাণবিক উপাদান ব্যবহার করেছে: লাভিসান-শিয়ান, ভারামিন এবং তুর্কুজাবাদ। বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মাঝে সন্দেহ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে:
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে।
সংরক্ষিত ইউরেনিয়াম অন্য দেশে স্থানান্তর করা হবে।
ইরানের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গবেষণার জন্য পারমাণবিক জ্বালানি বিদেশি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।
এই প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য হলো— ইরান যেন পারমাণবিক শক্তিকে কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে এবং অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়।
ইরানের প্রতিক্রিয়া
তবে ইরান এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি— পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার তাদের নিজস্ব অধিকার এবং এটি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ গবেষণা ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ইরান IAEA-এর প্রতিবেদনকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উল্লেখ করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েল, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক রাষ্ট্র বিষয়টিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং জাতিসংঘে নতুন করে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবও সামনে আসতে পারে বলে আভাস মিলেছে।
তথ্যসূত্র: The New York Times, 1 June 2025