
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নকশায় ছয়টি ব্যাংক ও কারেন্সি নোটের ছবি প্রকাশ করেছে। নতুনভাবে প্রকাশিত এসব নোটের মধ্যে রয়েছে—৫০০, ২০০, ১০০ ও ১০ টাকার ব্যাংক নোট এবং ৫ ও ২ টাকার কারেন্সি নোট। নোটগুলোর ডিজাইনে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রকৃতি এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
নতুন ব্যাংক নোটগুলোতে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষর রয়েছে। অপরদিকে ৫ ও ২ টাকার কারেন্সি নোট দুটির নকশায় রয়েছে অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারের স্বাক্ষর। প্রতিটি নোটেই যুক্ত করা হয়েছে আধুনিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি, যা জালিয়াতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে, পুরনো নোটগুলোর প্রচলন আগের মতোই বজায় থাকবে।
রবিবার, ১ জুন ২০২৫-এ প্রথমবারের মতো এই নতুন নোট সীমিত আকারে কিছু ব্যাংকে সরবরাহ করা হয়েছে। ২ জুন থেকে সাধারণ গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে এই নোট সংগ্রহ করতে পারবেন। যদিও ঈদুল আজহার আগমনের কারণে চাহিদা বাড়ায় রাজধানীর বাইরের অঞ্চলে সরবরাহ কিছুটা সীমিত থাকতে পারে।
নতুন ছয়টি নোটে যেসব প্রতীক উঠে এসেছে:
৫০০ টাকা: সামনের দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মাঝখানে শাপলার চিত্র, পেছনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। সবুজ রঙের এই নোটে দেশের ইতিহাস ও বিচারব্যবস্থার প্রতীক ব্যবহৃত হয়েছে।
২০০ টাকা: সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অপরাজেয় বাংলা’ এবং শাপলা, পেছনে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়কার ছাত্রদের আঁকা গ্রাফিতি। নোটটির রঙ হলুদ।
১০০ টাকা: সামনে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, পেছনে সুন্দরবনের ছবি। নীল রঙের এই নোটে রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
১০ টাকা: সামনে বায়তুল মোকাররম মসজিদ, পেছনে গণঅভ্যুত্থানকালীন গ্রাফিতি। গোলাপি রঙে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরা হয়েছে।
৫ টাকা: সামনে ঐতিহাসিক তারা মসজিদ, পেছনে একই আন্দোলনের শিল্পচিত্র। এটি গোলাপি রঙের।
২ টাকা: সামনে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, পেছনে রায়েরবাজার বধ্যভূমি। হালকা সবুজ রঙের এই নোটে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র।
সব নোটেই জলছাপে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি, মূল্যমান এবং সরকারের মনোগ্রাম সংযোজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব নোট দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং সংগ্রামের অনন্য দলিল হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের পরিচিতি তুলে ধরবে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, নতুন এসব নোট একদিকে যেমন নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে, তেমনি জাতির সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।