পাবনায় বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণে আহত ১৫, সদস্য সচিবসহ বহিষ্কার ১০ নেতা‎

‎পাবনার সুজানগরে মোবাইল ফোন নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপির দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনায় দলের সদস্য সচিবসহ ১০ নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্র।

‎নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট


‎বাংলাদেশের পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলায় মোবাইলে কথা বলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির পক্ষ থেকে ১০ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

‎বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান, শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে।

‎বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন: সুজানগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রউফ শেখ (৫২)ছাত্রদল নেতা শেখ কাউছার (২৮)যুবদল নেতা মনজেদ শেখ (৪৫)সুজানগর পৌর বিএনপির ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর খা (৬০) সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কামাল শেখ (৪৬)পৌর যুবদল সদস্য মানিক খা (৩৮)সুজানগর এনএ কলেজ শাখার সভাপতি শাকিল খা (২৫)পৌর ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল খা (৪০)বিএনপি কর্মী লেবু খা (৬০) যুবদল কর্মী হালিম শেখ (৪০)

‎প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পাবনার সুজানগরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকায় এ নেতাকর্মীদের দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব ধরণের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

‎তবে একই ঘটনায় জড়িত মোলায়েম খা ও সুরুজসহ আরও কয়েকজন সম্পর্কে দলটি জানিয়েছে, তারা বিএনপি বা দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ নন। তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। দল আরও হুঁশিয়ার করেছে—এ ধরনের অপরাধীদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ রাখলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান বলেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত সদস্য সচিব আব্দুর রউফ শেখকে বহিষ্কারের ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বা অভিযোগ দেওয়া হয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

‎সংঘর্ষের শুরু সম্পর্কে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁয়ের অনুসারী আশিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন সদস্য সচিব আব্দুর রউফ শেখের ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাউছার ও তার সমর্থকরা।

‎ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে মীমাংসা হলেও, পরদিন বুধবার দুপুরে কাউছার ও তার অনুসারীরা আশিককে সিনেমা হলের সামনে ডেকে পাঠান। আশিক সঙ্গে করে তার চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা সবুজকে নিয়ে যান। সেখানে কথাকাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। সবুজ বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। এই ঘটনা জানাজানির পর আশিক ও সবুজ তাদের পরিবার এবং বিএনপি নেতাদের অবহিত করেন। এরপর মজিবর খা, লেবু খা, মানিক, সুরুজসহ দলবদ্ধভাবে এসে কাউছারদের ওপর হামলা চালান।

‎ঘটনার সময় আব্দুর রউফ শেখ পরিস্থিতি শান্ত করতে উপস্থিত হলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করা হয়। একই সময় সংঘর্ষস্থলে গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। গুরুতর আহত রউফ শেখকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *