চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার এক ছাত্রের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক ছাত্রীকে ছাদে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে।


নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আলমাস মাহফুজ রাফিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত রাফিদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মো. মহসিনের অনুসারী বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযুক্ত নিজে এবং ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী।

ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ৯ জুলাই পুরাতন কলা ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে তাকে ভয় দেখিয়ে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন আলমাস মাহফুজ রাফিদ।

তিনি জানান, ঘটনার আগের রাতেই অভিযুক্ত হুমকি দিয়ে বলেন, “হয় সম্পর্ক রাখো, না হয় তোমার নামে গুজব ছড়াবো।” পরদিন ছাদে নিয়ে গিয়ে রাফিদ তার শরীরে জোরপূর্বক হাত দেন এবং শারীরিক নির্যাতন করেন। ছাদ থেকে ফিরে এসে ক্লাসরুমেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে পানি ঢেলে তার জ্ঞান ফেরানো হয়। এখনও অভিযুক্ত তাকে নানা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।

তিনি আরও বলেন, রাফিদ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। কয়েকদিন সম্পর্ক থাকার পর তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড জানতে পেরে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর থেকেই অভিযুক্ত চাপ প্রয়োগ শুরু করে। ঘটনার দিন ছাদে দেয়ালে ঠেসে ধরে অশালীন আচরণ করে ও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এ ঘটনা জানাতে গিয়ে যাদের কাছে গিয়েছেন, তাদেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে—“আমার অনেক লোক আছে, বললেই গায়েব করে দেব।”

অভিযুক্ত রাফিদের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি এক বন্ধুকে ডেকে নিয়ে শারীরিক আক্রমণের চেষ্টার কথাও উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাফিদ দাবি করেন, “এই মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম ছিল। কিন্তু সে আমার সঙ্গে থাকার সময় আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক করছিল। সেই বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এভাবে মিথ্যা খবর ছড়ালে আমি আত্মহত্যা করে ফেলব। এখনও তদন্ত হয়নি, অথচ আমার নামে অভিযোগ করা হয়েছে।”

চবি ছাত্রদলের সভাপতি মো. মহসিনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
তবে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “সে আমাদের কর্মী কিনা জানি না। যদি হয়ে থাকে, তাহলে এমন অপরাধ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর হায়দার বলেন, “আমরা কয়েকদিন আগে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এটি নিপীড়ন বিরোধী সেলে পাঠানো হবে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিভাগ থেকেও খোঁজ নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *