
বাংলাদেশের উত্তরা এলাকায় বিমান বিধ্বস্তে প্রাণহানির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মঙ্গলবার সকাল ১০টায়।
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
ঢাকার উত্তরা এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে গভীর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের এই হৃদয়বিদারক ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টায় কলেজের গোল চত্বরে একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এই কর্মসূচি সোমবারের দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আয়োজক শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ অহিংস ও গণতান্ত্রিক। তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তারা কঠোর ও আপসহীন থাকবে। “ভয় নয়, আমরা চাই ন্যায়বিচার”—এই প্রতিবাদী স্লোগান সামনে রেখে তারা ছয়টি দফা দাবি উত্থাপন করেছে।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৬টি দাবির বিস্তারিত হলো:
বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের সঠিক নাম ও পূর্ণ পরিচয় প্রকাশ করতে হবে।
আহতদের নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
ঘটনাস্থলে শিক্ষকদের ওপর সেনাসদস্যদের ‘হাত তোলার’ অভিযোগে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
নিহত প্রতিটি শিক্ষার্থীর পরিবারকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ যুদ্ধবিমান বাতিল করে নতুন ও নিরাপদ বিমান সংযোজন করতে হবে।
বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনাকে মানবিক ও নিরাপদভাবে পুনর্বিন্যাস করতে হবে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, শুধু বিবৃতি কিংবা দুঃখপ্রকাশ যথেষ্ট নয়। তারা চান, দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হোক এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
রাজধানী ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন আরও ৭৮ জন। ইতোমধ্যে ২০ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলার এ কে খন্দকার বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের কিছু পরেই যুদ্ধবিমানটি মাইলস্টোন স্কুলের ভবনের ওপর ভেঙে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বেলা ১টা ১৮ মিনিটে এই খবর পায়।
পরবর্তীতে জানা যায়, বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত একটি এফটি-৭ বিজিআই মডেলের যুদ্ধবিমান—যা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়—চীনে নির্মিত এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কলেজ প্রাঙ্গণের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
বিমানের সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গেই স্কুল ভবনে আগুন ধরে যায়। সেই সময় আগুনে দগ্ধ শিশুদের আর্তনাদ এবং সন্তানদের খোঁজে ব্যাকুল মা-বাবা ও স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে ওঠে।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৭১ জন আহত হয়েছেন।