নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছেন, শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের দৃঢ় ভূমিকা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে এবং জাতিসংঘ মিশনে ধারাবাহিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশটি বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি জাতির মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং সংবিধাননির্ভর নীতির ওপর ভিত্তি করে গঠিত। আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে থাকব।”
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ঢাকার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি।
জেনারেল ওয়াকার জানান, শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১৬৮ জন সাহসী সেনা ও পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছেন। জাতি তাদের এই আত্মত্যাগ চিরদিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ১৯৮৮ সাল থেকেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে আসছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৯টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৫,১১৮ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন, যাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর ৪,৮৮০ জন, নৌবাহিনীর ৩৪৩ জন, বিমানবাহিনীর ৩৯৬ জন এবং পুলিশের ১৯৯ জন সদস্য আছেন। নারী শান্তিরক্ষীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৩,৬৪৫ জন নারী শান্তিরক্ষী অংশ নিয়েছেন এবং বর্তমানে ৪৪৪ জন কর্মরত রয়েছেন।
সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শুধু অংশগ্রহণই নয়, প্রশংসনীয় অবদানও রাখছে। কঙ্গোতে বাংলাদেশের হেলিকপ্টার কন্টিনজেন্ট মোতায়েন রয়েছে এবং পেরুর সেনাবাহিনীর জন্য বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী যান উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে, যার উদ্বোধনে সেনাপ্রধান নিজে এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন এবং আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
দিবসের সূচনা হয় ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ঢাকার তেজগাঁও ও অন্যান্য বিভাগীয় শহরে “শান্তিরক্ষী দৌড়-র্যালি-২০২৫” আয়োজনের মাধ্যমে, যেখানে বিভিন্ন বাহিনী ও জাতিসংঘের প্রতিনিধি সদস্যরা অংশ নেন।