
দক্ষিণ কলকাতার একটি ল কলেজে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক ছড়িয়েছে।
অভিযুক্ত বন্ধুর ধর্ষণে প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা, তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য ঘিরে বিরোধীদের সমালোচনা
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
কলকাতার একটি ল কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তৃণমূলের প্রবীণ সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “বন্ধু যদি বন্ধুকে ধর্ষণ করে, তাহলে কী করা যাবে? পুলিশ কি স্কুলে বসবে?”
তিনি আরও মন্তব্য করেন, “এই ধরনের অপরাধ তো কিছু পুরুষই করে, তাই নারীদের উচিত এই বিকৃত পুরুষদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।” তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তীব্র সমালোচনা চলছে।
ঘটনার বিস্তারিত অনুযায়ী, অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, যিনি ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও আইনজীবী, অপর দুইজন ছাত্র জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়সহ ওই ছাত্রীকে গার্ডরুমে ডেকে নিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, সেখানে মনোজিৎ তাকে ধর্ষণ করে, অন্য দুইজন সহায়তা করে এবং পুরো ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র অনুযায়ী, তাকে হকি স্টিক দিয়ে মারধর করা হয়, ইনহেলার চাওয়া সত্ত্বেও দেওয়া হয়নি এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে এবং চারদিনের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। জব্দ করা হয়েছে মোবাইল ফোন ও ভিডিও ফুটেজ।
ভুক্তভোগী দাবি করেছেন, মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ছিলেন কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের অঘোষিত নেতা। তার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
এ বিষয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি স্পষ্ট বলছি – যেই দোষ করেছে, তাকে গ্রেফতার করতে হবে। তবে বন্ধু যদি বন্ধুকে ধর্ষণ করে, সেটা দুর্নীতি নয়। এটা রাজনৈতিক বিষয় নয়।”
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনা নিয়ে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসন ধর্ষকদের রক্ষা করছে।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যে নারী সুরক্ষা, ছাত্র রাজনীতিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অন্য পত্রিকার হেডলাইন:
Zee 24 Ghanta: কলেজ পড়ুয়াকে গণধর্ষণ, মন্তব্যে বিতর্কে কল্যাণ, পাল্টা বিজেপির
আনন্দবাজার পত্রিকা: ‘বন্ধু বন্ধু’ বলেও কি ধর্ষণ হয়? কটাক্ষের মুখে কল্যাণের মন্তব্য
সংবাদ প্রতিদিন: বন্ধু বন্ধু বলেই ধর্ষণ মাফ? ধর্ষণ মামলায় কল্যাণের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক