
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে বলে মত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে রোববার (১১ মে) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। ওই অনুষ্ঠানে নাগরিক উদ্যোগ, নাগরিক কোয়ালিশন এবং সংবিধান সংস্কার নিয়ে গঠিত নাগরিক জোটের ৭টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব জাতীয় সংসদের। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এটি সম্পন্ন হতে ৮ থেকে ৯ বছরও সময় লেগেছে। ফলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, “আমি কি এখনো ৭২-এর সংবিধান চালু রাখব?” নতুন সংবিধান না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদই কাজ চালিয়ে যাবে এবং প্রয়োজন হলে ৭২-এর সংবিধানে সংশোধন আনবে।
তিনি আরও জানান, যখন গণপরিষদ গঠিত হবে, তখন তারা নতুন সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করবে। এটি সম্পন্ন করতেও ২-৩ বছর সময় লাগতে পারে বলে তিনি মনে করেন। সেই সময়ের জন্য সংসদ সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলবে।
জুলাই সনদের গুরুত্ব প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, এই সনদটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি ধারণা দেন, সবাই এর অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত হবেন এবং কিছু মৌলিক বিষয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি জনপ্রিয় দাবি এবং তিনিও এতে একমত। তবে কেবল দাবি করলেই হবে না, যুক্তিসঙ্গত আলোচনা প্রয়োজন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পৃথিবীর আর কোন কোন দেশে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত আছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। তার মতে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করা।
এছাড়া, সংসদে উচ্চ কক্ষ সংযোজন এবং প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়েও মত দেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি যেন প্রধান বিচারপতিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা দরকার। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধান বিচারপতি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।