বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাসহ অন্তত ১০ জনকে মারধর

নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট

বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সংগঠকসহ কমপক্ষে ১০ জনের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৮ জুন) রাত ৯টার দিকে। হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশই গ্রামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে একটি বিরোধের সূত্রপাত হয়। খেলায় বলের আঘাতে উদ্দীপন এনজিওর কর্মী সোহাগ আলমের এক বছর বয়সী শিশু আনাছুর রহমানের মাথায় আঘাত লাগে। এরপর তার মা আমেনা আক্তার বিথী এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে অভিযোগ ওঠে, অভিযুক্ত দুই কিশোর রাহুল ও সাফোয়ানের পরিবার সোহাগ আলমকে কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নিতে হুমকি দেয়।

হাসপাতালে ভর্তির পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযুক্তদের আত্মীয় মাসুদ, কামাল ও তুষার হাসপাতালের চত্বরে গিয়ে সোহাগের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা শিশুটির ফুফু জান্নাতুল ফেরদাউসকে চুল ধরে টেনে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হন। তখন হামলাকারীরা প্রায় ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।

এই হামলায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন: রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম এবং সংবাদকর্মী রায়হানুর রহমানসহ আরও কয়েকজন। সবাইকে হাসপাতালেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল বাশার জানান, তিনজন সন্দেহভাজন—মাসুদ, কামাল ও তুষারকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপের প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, “চিকিৎসা কেন্দ্রের ভেতরে এমন সহিংসতা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমাদের চিকিৎসক ও সেবিকারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।”

হামলার পর রাতে হাসপাতালে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম। তিনি একে “নিকৃষ্ট ও কাপুরুষোচিত” আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমরা পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *