
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংজ্ঞা নতুনভাবে পুনর্গঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে এই পরিবর্তিত সংজ্ঞাসহ একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়, যেখানে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে—মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কারা এবং কোন দল বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনে সংশোধনী এনে মঙ্গলবার রাতে সংশ্লিষ্ট নতুন অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সেখানে সংজ্ঞায় বলা হয়, (১২) “মুক্তিযুদ্ধ” বলতে বোঝায়—১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আশায় পরিচালিত সংগ্রাম। এই সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছিল দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে।
নতুন সংজ্ঞায় বিশেষভাবে ‘তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর’ নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
উক্ত সংগঠনসমূহ বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যারা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে সেই সময় সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে থাকা বেসামরিক নাগরিক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, মুজিবনগর সরকার এবং তাদের স্বীকৃত বাহিনীসমূহ—যেমন নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্যরা—বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধের ‘সহযোগী’ কে হবেন, তাও নতুন করে সংজ্ঞায় নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে যারা দেশ কিংবা প্রবাসে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের গতি বাড়িয়েছেন, আন্তর্জাতিক জনমত গঠন, কূটনৈতিক সহায়তা এবং মনস্তাত্ত্বিক শক্তি সৃষ্টিতে যাঁরা অবদান রেখেছেন—এমন বাংলাদেশি নাগরিকরা মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
এছাড়াও, ‘মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য’ বলতে বোঝানো হয়েছে, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রবাসে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য।