
নিউ ঢাকা টাইমস : ডেক্স রিপোর্ট
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মাসুম মিয়া নামের এক ব্যক্তির মরদেহ থেকে দুটি চোখ অদৃশ্য হয়ে গেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা, অন্যদিকে হাসপাতালের কর্মচারীরা দাবি করছেন—চোখ দুটি ইঁদুর খেয়ে ফেলেছে!
সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর বুড়িরহাট বাহারদুর সিংহ জিপেরপার গ্রামের বাসিন্দা মাসুম মিয়ার সঙ্গে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে শ্যালক সাইদুরের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। সাইদুরের লোকজন তার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করলে গুরুতর আহত অবস্থায় মাসুমকে রংপুর মেডিক্যালে আনা হয়, তবে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর নিহতের মেয়ে মারুফা বেগম বাদী হয়ে পরশুরাম থানায় সাইদুরসহ তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে রাখে। কিন্তু পরদিন সকালে ময়নাতদন্তের সময় দেখা যায়, মাসুম মিয়ার দুটি চোখ নেই। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত স্বজনরা হৈচৈ শুরু করেন এবং ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
নিহতের মেয়ে মারুফা বেগম অভিযোগ করেন, লাশঘরটি অরক্ষিত, সেখানে ফ্রিজিং ব্যবস্থাও সঠিকভাবে কাজ করে না। দুজন ডোম ছাড়া সেখানে কোনো দায়িত্বশীল কেউ নেই। তার প্রশ্ন—তবে বাবার চোখ কীভাবে উধাও হলো?
এদিকে মর্গের এক ডোম নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, মর্গে বড় বড় গর্ত করে ইঁদুর বাস করে। অতীতে কয়েকটি লাশের চোখ খেয়ে ফেলেছে। কেউ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এই ঘটনা বারবার ঘটছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মানিক ইসলাম বলেন, ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে, এটি প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে লাশের সুরতহালকারী এসআই হানিফ জানান, সুরতহাল করার সময় চোখ দুটি তিনি দেখেছেন বলে মনে করেন, তাই তিনি নিজেও বিস্মিত।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, তিনি বাইরে আছেন। উপপরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ওসি মাইদুল ইসলাম বলেন, “লাশ দেখতে গিয়েছিলাম, চোখ ছিল না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”